শেষ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ঢুকতে দেওয়া হলো না বিতর্কিত সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানকে। পদত্যাগ করে গত বৃহস্পতিবার তিনি কানাডার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছিলেন। কিন্তু কানাডার টরেন্টো বিমানবন্দরে নামার পর তাকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় এবং পাঁচটি কারণ দেখিয়ে তার প্রবেশাধিকার রহিত করে কানাডার ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট। এর পরপরই পরবর্তী ফ্লাইটে তাকে দুবাই নিয়ে আসে এমিরেটস। কিন্তু দুবাইয়ে তার বৈধ ভিসা না থাকা এবং অন এ্যারাইভাল ভিসার শর্ত পূরণ না করার প্রেক্ষিতে তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল সকালে তিনি ঢাকায় আসবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে ডা. মুরাদ হাসানকে কানাডায় ঢুকতে দেয়নি দেশটির বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি। সেখান থেকে তাকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফিরতি ফ্লাইটে দুবাই পাঠানো হয়।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা ২০ মিনিটে তিনি ঢাকায় ফেরার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলেও জানা গেছে। তবে, ডা.মুরাদের বাংলাদেশে ফেরত আসা কিংবা তার অবস্থানের ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে, এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ৫টা ৫৫ মিটিন) ডা. মুরাদের ঢাকায় ফেরার বিষয়ে নিশ্চিত করে দায়িত্বশীল কোনো সূত্র সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেননি।
নারীর প্রতি অশোভন মন্তব্য করে বিতর্কিত হওয়া সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় ১.৩১ মিনিটে টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন।
পরে বাংলাদেশে নারীদের হয়রানি, অপমান এবং নির্যাতনের কারণে তাকে ইমিগ্রেশন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেই সঙ্গে তার কাছে বিভিন্ন ভিডিও, ছবি ও সংবাদ এর বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি কী কারণে কানাডায় এসেছেন, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়। এ সময় কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ দেখাতে ব্যর্থ হন ডা. মুরাদ। তার সরকারি ও ব্যক্তিগত পাসপোর্ট জটিলতার বিষয়েও কানাডা ইমিগ্রেশন জানতে চাইলে কোনো সঠিক উত্তর দিতে না পারায় তাকে কানাডা পিয়ারসন এয়ারপোর্ট থেকে পুনরায় দুবাইয়ে ফেরত পাঠানো হয়।
অশালীন, শিষ্টাচারবহির্ভূত, নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য প্রদান এবং এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে অশালীন ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর গত সোমবার জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগ করেন। সেদিন রাতেই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে মুরাদ হাসানকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।