করোনা ভাইরাস (কোভিড ১৯)-এর প্রার্দুভাবের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের কর্মহীন ও দুস্থ অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছে পূর্ব লন্ডনের দাতব্য সংস্থা ‘গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট’। গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শীত, আইলা, সিডর এবং অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে জরুরি খাদ্য সামগ্রী, ঔষধ সরবরাহ, পানীয় জলের ব্যবস্থা, শীতবস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন সঙ্কটে মানুষকে সহায়তা করে এবং বিভিন্ন জনসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে খুব অল্প সময়েই কমিউনিটির মানুষের নজর কেড়েছে। এটি এখন পর্যন্ত ২৫০০ এতিমকে তাদের পড়াশোনায় সহায়তা করেছে। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ১০০০ জন আল কোরআনের হাফিজ হয়েছে। ‘গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট’ বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড় প্রবণ অঞ্চল বাগেরহাটে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয় করে একটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করেছে, যা বছরের অন্য সময়ে স্কুল হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া ‘গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট’ সোমালিয়া ও সোমালি ল্যান্ডের পিছিয়ে পড়া মহিলাদের উপার্জনে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রশিক্ষণসহ তাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করছে সেই সাথে সোমালিয়ায় স্থায়ীভাবে নলকূপ স্থাপন করে হাজার হাজার মানুষের পানির চাহিদা পূরণ করছে। রোহিঙ্গা সংকটে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে। গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, ইস্ট আফ্রিকা ও আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে সঙ্কটে মানবিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ‘ফ্রি আই ক্লিনিক’ স্থাপন করে গরীব রোগীদের বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন করছে। যুক্তরাজ্যে আল কোরআনের বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘কিউ ফ্যাক্টর’ নামক কিরাত প্রতিযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ‘গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট’ এর মত যুক্তরাজ্যে যেমন অনেক স্বনামধন্য চ্যারিটি সংগঠন আছে তেমনি কমিউনিটির কিছু চ্যারিটি সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। বাংলাদেশের অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বাংলা নিউজ’, বিলেতের সাপ্তাহিক ‘জনমত’ ও সাপ্তাহিক ‘সুরমা’ তাদের নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এছাড়াও জনমনে অনেক প্রশ্ন আছে। এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়েই ‘গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট’এর সিইও ড. আশরাফ মাহমুদ মুখোমুখি হয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জয়নুল আবেদীন।
প্রশ্ন:- আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?
উত্তর:- ওয়ালাইকুম সালাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
প্রশ্ন:- বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে চ্যারিটি নিয়ে সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে। এর ভিত্তিও আছে। চ্যারিটি কমিশনে প্রদত্ত বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের খতিয়ান থেকে দেখা যাচ্ছে যে, কিছু কিছু চ্যারিটি ডোনেশনে প্রাপ্ত আয়ের চেয়ে তাদের বেতন-ভাতা, এডমিন ও প্রচার কাজেই বেশি ব্যয় করেছেন। কোন এক সংস্থার সিইও বছরে প্রায় ৬৫ হাজার পাউন্ড বেতনই নিয়েছেন। ‘গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট’ এর আর্থিক বিষয়াদি কতটা স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে?
উত্তর:- কারা কিভাবে কী করছেন সেটা আমি ঠিক বলতে পারবোনা। প্রত্যেকটা চ্যারিটি তার নিজস্ব পলিসিতে চলে। আমি গ্লোবাল এইড ট্রাস্টের বিষয়ে বলতে পারি যে এর আর্থিক বিষয়াদি শতভাগ স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। আমি এক ধরনের নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে মানুষের সেবার উদ্দেশ্য সিইও হিসাবে এখানে ভলান্টারি করছি। আমি পেশা হিসাবে ইউকের বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে শিক্ষকতা করছি। আমাদের ট্রাস্টি এবং ভলান্টিয়ারগণও এখানে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন, এর পাশাপাশি প্রত্যেকেই অন্য সন্মানজনক পেশায় জড়িত আছেন। চ্যারিটি থেকে কেউ কোন পারিশ্রমিক নিচ্ছেন না।
প্রশ্ন:- আপনি জানেন চ্যারিটি সংগঠন নিয়ে অনেক আগে থেকেই আমাদের কমিউনিটিতে বেশ কিছু সমালোচনা আছে। বিশেষ করে এবারে টিভি চ্যানেলে লাইভ আপিল নিয়ে অনেক বেশি সমালোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, চ্যারিটি আপিলের টাকায় চ্যারিটি সংগঠন ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো চলছে। বছরব্যাপি তারা কালেকশন করছে। চ্যারিটি আপিলের নামে পবিত্র ধর্ম ইসলামকে তারা টেলিভিশনে বিক্রি করছে। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?
উত্তর:- চ্যারিটি আপিলের টাকায় কোন চ্যারিটি সংগঠন বা টেলিভিশন চ্যানেল চলছে কিনা আমার ঠিক জানা নাই। আমাদের গ্লোবাল এইড ট্রাস্টের সাথে টিভি চ্যানেলের বাৎসরিক চুক্তি আছে। সারাবছর এডভার্ট হিসাবে তাদের সাথে যে চুক্তি হয় সেই চুক্তির আলোকে এখানে সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কালেকশনে বা লাইভ আপিলে বাড়তি কিছু তাদের দিতে হয়না। কালেকশনের জন্য ধর্ম বিক্রি করার অভিযোগ সঠিক নয়।
প্রশ্ন:- গত রমজানের ঈদে বাংলাদেশে তুলনামূলক কম রেমিটেন্স গিয়েছে। বলা হচ্ছে চ্যারিটি সংগঠনগুলোর লাইভ আপিলের কারণে এটা হয়েছে। মানুষ সরাসরি দেশে টাকা না পাঠিয়ে চ্যারিটি সংগঠনগুলোর লাইভ আপিলে টাকা দিচ্ছে। পুরো রমজান মাস জুড়ে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনগুলো টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে কালেকশন করেছে। ফলে তেমন কোন অর্থ যায়নি দেশে। এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন?
উত্তর:- গত রমজানের ঈদে বাংলাদেশে তুলনামূলক কম রেমিটেন্স গিয়েছে লাইভ আপিলেও কালেকশন খুব কম হয়েছে। এর কারণ করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ সংকটে আছেন। বিশেষ করে প্রবাসীরা নানা সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এই সংকট কেটে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। দেশে আবার আগের মত রেমিটেন্স যাবে।
প্রশ্ন:- আগে দেশের যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা দুঃসময়ে দুগর্ত বিপন্ন মানুষের জন্য গঠিত রাস্ট্রীয় তহবিলে প্রবাসীরা টাকা দিতো। বর্তমানে প্রবাসীদের সাহায্য পাওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে বলে বাংলাদেশ হাই কমিশন সূত্রে একটা অভিযোগ জানা গেছে। বিশেষ করে বলা হচ্ছে, এর পেছনে ফান্ড রেইজারদের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। এরা ধর্মভীরু মানুষকে বেহেশতের সার্টিফিকেট ও আখেরাতে মুক্তির আগাম নিশ্চয়তা দিচ্ছে। এভাবে ফান্ড রেইজিং এর ফলে কমিউনিটির অধিকাংশ সহজ সরল মানুষ তাদের সাহায্যের যাবতীয় অর্থই দান করে ফেলছে। কমিউনিটির চ্যারিটি সংগঠনগুলোর লাইভ আপিলের কারণেই এমনটা হচ্ছে। আপনি কী জবাব দিবেন?
উত্তর:- লাইভ আপিল হচ্ছে মানুষকে সহযোগিতা করতেই। যেমন ধরেন, গতবার সিলেটে বন্যা হলে আমরা ইমিডিয়েট আপিল করেছি এবং যা পেয়েছি মাত্র দু‘দিনের ভেতরেই তা পাঠিয়ে দিয়েছি এবং এক সপ্তাহের ভেতরেই ডিস্ট্রিবিউশন কমপ্লিট করেছি। ফান্ড রেইজাররা রাস্ট্রীয় তহবিলে টাকা দিতে নিরুৎসাহিত করছে বলে আমার জানা নাই। আসল কথা হলো করোনা ভাইরাসের কারণে প্রবাসীরা সংকটে আছেন। আর কোন মানুষ মানুষকে বেহেশতের সার্টিফিকেট ও আখেরাতে মুক্তির আগাম নিশ্চয়তা দিতে পারেনা। কে বেহেশতে যাবে এটা নির্ধারন করা কোন মানুষের কাজ না।
প্রশ্ন:- প্রত্যেক প্রবাসী বাঙালিরই আত্মীয় স্বজন কিংবা চেনা জানা ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই দরিদ্র। প্রবাসীদের জাকাত ফিতরা আর সাধারণ দানের উপর তারা ছিলেন অনেকটাই নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক সময়ে ফান্ড রেইজিংয়ের জোয়ারে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের দানের একটা বড় অংশ চলে যাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে। ফলে প্রবাসীদের গরীব আত্মীয়স্বজন ও কাছের মানুষেরা খুব বিপদে আছেন বলে জানা গেছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের সাহায্য কমে যাওয়ায় সিলেটের গ্রামগঞ্জের গরীব মানুষের অসহায়ত্ব দিন দিন বাড়ছে বলে অনেকেই মনে করছে। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?
উত্তর:- চ্যারিটি সংগঠনগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা আছে দেখেই তারা ডোনেট করছে। যারা ডোনেট করছে তারা তাদের বিশ্বাস আর ভালোবাসার জায়গা থেকে সেটি করছে। যা দিচ্ছে জেনে বুঝেই দিচ্ছে। সেই সাথে দেশে তাদের আত্মীয় স্বজনকেও দিচ্ছে। নানাজনকে সাহায্য সহযোগিতা করছে। আমরা কাউকে নিরুৎসাহিত করছিনা। দানের ক্ষেত্রে আমরা বরং নিজের ঘর থেকেই শুরু করার পরামর্শ দিচ্ছি।
প্রশ্ন:- রমজান মাসে ব্রিটিশ মুসলমানদের দান সর্বমহলে প্রশংসিত হয়ে আসছে। চ্যারিটি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী রমজান মাসে ব্রিটিশ মুসলমানরা সবচেয়ে বেশী পরিমাণ অর্থ দান করে থাকেন। তাদের দানের অর্থে প্রতিবছর এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা ছাড়াও বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ উপকৃত হয়ে থাকেন। একই সাথে তারা আবার এও সন্দেহ পোষণ করছেন যে, অনেক মুসলিম চ্যারিটি সংস্থা হয়তো জঙ্গি সন্ত্রাসীদের অর্থায়নে সাহায্য জোগাচ্ছেন। সেজন্য একটি বড় মুসলিম চ্যারিটির একাউন্ট ব্রিটেনের একটি বড় ব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে আপনার কিছু বলার আছে?
উত্তর:- কোনমুসলিম চ্যারিটি সংস্থা জঙ্গি সন্ত্রাসীদের অর্থায়নে সাহায্য জোগাচ্ছে বলে আমার জানা নেই। চ্যারিটি কমিশন এটা ভালো বলতে পারবে। তবে আমরা এ ধরনের কাজকে কোনভাবেই সমর্থন করিনা। গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট কোন জঙ্গি সন্ত্রাসীদের অর্থায়নে সাহায্য করেনা। আমরা এটা কোন ভাবেই যুক্তিযুক্ত মনে করিনা।
প্রশ্ন:- বলা হয় যে, দান দক্ষিণা ঘর থেকে শুরু করতে হয়। প্রতিবেশি কেউ অভুক্ত থাকলে তার দিকেও নজর দিতে হয়। বাংলাদেশের মানুষের নিজের ভাই-বোন, মামা-চাচা বা অন্যান্য নিকট আত্মীয় স্বজন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করলেও, রক্তের সম্পর্কের মাঝে কেউ এতিম থাকলেও তার দায় দায়িত্ব না নিয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার মাইল দূরের কোন দেশের অচেনা কাউকে সাহায্য করাটাকে আপনি কতটুকু যুক্তিযুক্ত মনে করেন?
উত্তর:- আমি আগেই বলেছি যে, দানের ক্ষেত্রে আমরা সব সময় নিজের ঘর থেকেই শুরু করার পরামর্শ দিচ্ছি। নিজের ভাই-বোন, মামা-চাচা বা অন্যান্য নিকট আত্মীয় স্বজন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করলে ও রক্তের সম্পর্কের মাঝে কেউ এতিম থাকলে সবার আগে তার দায় দায়িত্ব নেওয়া উচিত। তারপর যদি সম্ভব হয় হাজার মাইল দূরের কোন দেশের অচেনা কাউকে সাহায্য করবেন। সম্ভব না হলে করবেন না।
প্রশ্ন:- বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবেই স্বেচ্ছাসেবা, অনুদান কিংবা চ্যারিটি কার্যক্রম ছিলো এবং এখনো আছে। কিন্তু বর্তমানে বলা হচ্ছে, চ্যারিটির নামে ব্যবসা চলছে। মানুষের দানকৃত অর্থ নিয়ে চ্যারিটি নামধারী সংগঠনগুলো ব্যবসা করছেন, দেশে অপসংস্কৃতি ছড়াচ্ছেন। শতকরা কতভাগ অর্থ উপযুক্ত প্রাপকদের কাছে পৌঁছে এ নিয়েও কমিউনিটির অনেকের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। এই প্রশ্নগুলোর কী জবাব দিবেন?
উত্তর:- অন্যদের কথা আমি বলতে পারবো না। আপনারা জানেন গিফট এইড নামে ইউকে গভমেন্ট এর একটা স্কিম আছে। সেই গিফট এইডের পুরো অংশ আমাদের আনুসঙ্গিক খরচ কাভার করে। গিফট এইড এবং কালেকশন থেকে সামান্য নিয়েই চ্যারিটি এডমিন ম্যানেজ করা সম্ভব। কাজেই চ্যারিটির নামে ব্যবসা চলছে আমি এই কথার সাথে মোটেও একমত না। অপবাদ দেওয়ার মধ্যে আমি কোন কল্যাণ দেখিনা। অপবাদ দিয়ে পুরো চ্যারিটি কাজকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা কোন ভালো কাজ হতে পারেনা। ডোনাররা নিশ্চিন্তে দান করতে পারেন, এতে করে তাদের দানের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবেনা।
প্রশ্ন:- ফান্ড রেইজিং আপিলের সুযোগ দিয়ে টিভি কর্তৃপক্ষের কেমন লাভ করছেন? এই প্রশ্নটি বিগত কয়েক বছর যাবতই কমিউনিটিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর সঠিক কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। ব্রিটেনের আইনে কোন চ্যারিটি আপিলের জন্য স্লট বরাদ্দ করে কোন মিডিয়া প্রতিষ্ঠান অর্থ গ্রহণ করতে পারে না। অথচ বিভিন্ন মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে যে, প্রতিটি টিভি চ্যানেলই একেক রাতের জন্যে সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৩ হাজার পাউন্ড করে অর্থ নিচ্ছে। আপনার কাছে কী এই প্রশ্নের কোন উত্তর আছে?
উত্তর:- সব টিভি চ্যানেলের কথা আমি বলতে পারবোনা। আমাদের গ্লোবাল এইডের সাথে যে টিভি চ্যানেলের সারা বছর এডভার্ট হিসাবে চুক্তি আছে সেই চুক্তির বাইরে কালেকশনে বা লাইভ আপিলে বাড়তি কোন অর্থ দিতে হয়না। নির্দিষ্ট আপিল থেকেও কোন পয়সা তাদের দিতে হয়না। তবে এক বক্স আপেলের মধ্যে যদি কোন আপেল নস্ট থাকে তার জন্য অন্য আপেল খাওয়া বন্ধ করা কোন ক্রমেই ঠিক হবেনা।
প্রশ্ন:- চ্যারিটি সংগঠনের মাধ্যমে যারা ডোনেট করছেন তারা তাদের বিশ্বাস আর ভালোবাসার জায়গা থেকে সেটি করছেন। সাধারণ মানুষ বা ডোনাররা যা দান করেন তা শতভাগ প্রাপক পাবেন এই আশায় তারা দান করছেন। কিন্তু আমরা জানি চ্যারিটি সংগঠনগুলোর অফিস, এডমিনিস্ট্রেশনসহ লোকবল ও প্রচার কাজে একটা অফিসিয়াল খরচ আছে। চ্যারিটি সংগঠনগুলোর ব্যবস্থাপনায় যারা আছেন তারা এ দুয়ের মধ্যে কতটুকু ভারসাম্য বজায় রাখছেন বলে আপনি মনে করেন?
উত্তর:- প্রত্যেক চ্যারিটি তাদের নির্দিষ্ট পলিসি অনুযায়ী কাজ করছে। আমি কখনোই কাউকে ডিসকারেজ করিনা। তবে সকল চ্যারিটি সংগঠনকে অবশ্যই কালেকশন এবং ডিস্ট্রিবিউশনের ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন:- বছর দুয়েক আগে লন্ডনে টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে মৌলবাদীদের তহবিল সংগ্রহ অভিযান চলছে বলে খবর বেরিয়েছে। খবরে তারা বলেছে, ‘তহবিল সংগ্রহের প্রচলিত ধারণাকে পাল্টে দিয়ে লন্ডনে বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিভিন্ন মৌলবাদী সংগঠনের জন্য ফান্ড রেইজিং করছে। মূলত বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামেই চলছে লাখ লাখ পাউন্ড সংগ্রহ। অথচ বিপুল এই অর্থ যাচ্ছে মূলত: মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গি সমর্থক জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু সংগঠনের হাতে। ধর্মভীরু মানুষের কাছে নানা অবকাঠামোগত উন্নয়নের নামে তারা সাহায্য প্রার্থনা করেন। এভাবে তারা প্রতি বছর লাখ লাখ পাউন্ড সংগ্রহ করেন। কিন্তু এই তাদের এই উন্নয়নকাজ আর শেষ হয় না। শেষ হয় না তাদের আবেদনও। একই কাজের কথা বলে তারা প্রতি বছর অর্থের জন্য আবেদন করছেন। তারা বিপন্ন বা দুর্গত মানুষের জন্য নয়, বরং বিতর্কিত মৌলবাদী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহে নেমেছেন।‘ এ ব্যাপারে আপনার কিছু বলার আছে?
উত্তর:- কেউ করছে কিনা এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নাই। তবে আমরা এসব কোন কাজের সাথে সম্পৃক্ত না, সমর্থনও করি না।
প্রশ্ন:- ‘দ্যা গ্রেইট বেঙ্গল টুডে‘র পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?
উত্তর:-‘দ্যা গ্রেইট বেঙ্গল টুডে’ প্রকাশনার শুরু থেকেই দেশ বিদেশের বাঙালি বিশেষ করে বিলেতে বাঙালি কমিউনিটির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। পৃথিবীর সকল প্রান্তের সকল বাঙালিদের খবর পরিবেশন করছে। বাঙালির আত্ম-মর্যাদাবোধ ও সত্য প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। দেশ ও সমাজ সেবামূলক কাজকে সব সময় উৎসাহিত করছে। সর্বোপরি সব সময় ভালো কাজ করার চেষ্টা করছে। পাঠকরা আশাকরি পত্রিকা পড়বেন এবং সব সময় তাদের পাশে থাকবেন।
ব্যস্ততার মাঝেও আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাদেরকেও ধন্যবাদ। সেই সাথে ‘দ্যা গ্রেইট বেঙ্গল টুডে’ এর সকল শুভানুধ্যায়ীদের ও বাংলাদেশ, আসাম, আরাকান, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, বিহার, উড়িষ্যা, আন্দামানসহ সকল জায়গার পাঠকদের ধন্যবাদ।