বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক: বান্দরবনের লামায় রাবার বাগানের নামে দখল করা জমিসহ পাহাড়িদের সব জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। জুমখেত পুড়িয়ে দেওয়ার কেউ চাষবাস করতে পারছেন না। স্থানীয়রা এখন ভূমি হারিয়ে ভবিষ্যতের চিন্তায় দিশেহারা। তাঁদের খাওয়া জুটছে না।
পাহাড়িদের ভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে এক নাগরিক সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন পিপলস ভয়েস ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের যৌথ আয়োজনে শুক্রবার বিকেলে নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, রাবার বাগানের নামে পাহাড়ের ভূমি বছরের পর বছর ধরে একদল মুনাফাভোগী দখল করে চলেছে। এর মাধ্যমে পাহাড়ি জনপদের আত্ম পরিচয় বিলীন করে দেওয়া হচ্ছে।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সুপ্রিয় তংচংগ্যার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. আলাউদ্দিন। এ সময় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, অধ্যাপক অশোক সাহা, নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজি, পিপলস ভয়েসের সভাপতি শরীফ চৌহান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি তাপস হোড়, কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, একাত্তরে প্রাণ দিয়ে দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল এ প্রত্যাশায়— দেশে কোনো শোষণ নিপীড়ন থাকবে না। কিন্তু নিষ্ঠুর পুঁজিবাদ আর মুনাফাখোরদের হাতে মানুষ আজ বন্দি। নিজ দেশে পরবাসী পাহাড়ের মানুষেরা। রাবার বাগানের নামে পাহাড়ের ভূমি বছরের পর বছর ধরে দখল করা হচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল লামা উপজেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সরই ইউনিয়নের লাংকমপাড়া, জয়চন্দ্রপাড়া ও রেংয়েনপাড়া পাড়াবাসীর ৪০০ একর জুমচাষের বনাঞ্চল থেকে ৩৫০ একর পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
আগুনে পাড়াবাসীর ফলদ-বনজ বাগান, ধানের খেত ও গাছ-বাঁশ পুড়ে যায়। তখন থেকে তিনটি পাড়ার ৩৬টি ম্রো ও ত্রিপুরা পরিবার খাদ্যসংকটে পড়ে। পাড়াবাসীর অভিযোগ, লামা রবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড কোম্পানি রাবারবাগান করার জন্য জুমচাষের নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক বনাঞ্চল পুড়িয়ে দিয়েছে।