শিরোনাম
শুক্র. ডিসে ৫, ২০২৫

টাঙ্গাইল দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হলেন গোপাল চন্দ্র বসাক

মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে তামাশায় লিপ্ত হয়েছে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার। দেশের মানুষের ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে আলেম-ওলামা তৈরির জন্য বৃটিশ আমল থেকেই যাত্রা করেছিল আলীয়া মাদ্রাসা। দীর্ঘ এই সময়ে কোন সরকারের আমলে মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে এতটা তামাশায় লিপ্ত হয়নি, যতটা তামাশায় লিপ্ত হয়েছে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার। কোরআন-হাদিসের আলোকে শিক্ষার কারিকুলামে তৈরি সিলেবাস পড়ানোর জন্য কামিল মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে একজন সনাতন ধর্মাবলম্বীকে।

কামিল হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ ক্লাস। কামিল ক্লাসে হাদিস ও কোরআনের তাফসির এবং ইসলামের ইতিহাস ছাড়া অন্যকিছু সিলেবাসে নেই। এমন-ই একটি সিলেবাসভুক্ত ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে টাঙ্গাইল দারুল উলুম কামিল মাদরাসা। এই মাদ্রাসায় সম্প্রতি সনাতন ধর্মাবলম্বী বাংলা অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল নিযুক্ত করার খবর পাওয়া গেছে।

এই নিয়োগের খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে সরকার কি তাহলে মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে তামাশায় লিপ্ত হয়েছে! এর আগে বিগত দাখিল (এসএসসি সমমান) পরীক্ষার সময় হঠাৎ করেই রুটিনে দেখা যায় আরবী সাহিত্যের পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত নয়। অথচ, দাখিল পরীক্ষায় মাদ্রাসা শিক্ষা শুরুর পর থেকেই ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়ে আসছে। হঠাৎ করেই এ বছরের পরীক্ষার রুটিন থেকে বাদ দেওয়া হয় দাখিলের আরবী সাহিত্য।

এদিকে একটি কামিল মাদ্রাসায় সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়েছে নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ জামিয়াতুল মোদাররেছীন। এই সংগঠনটির সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন ও মহাসচিব প্রিন্সিপাল শাব্বীর আহমদ মোমতাজী এক বিবৃতিতে বলেন, মাদরাসা শিক্ষা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি পবিত্র ও অন্যতম শ্রদ্ধাস্থল। এ শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের প্রকৃত নায়েবে রাসূল (সা.) ও ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন করে গড়ে তুলে দেশ ও জাতির উন্নয়নে সর্বাগ্রে অবস্থান নেয়া। যুগযুগ ধরে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে মাদরাসা শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন ও পরিবর্তন হলেও এ শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান ও নীতি নির্ধারণী পরিষদে সর্বদাই মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

টাঙ্গাইল দারুল উলুম কামিল মাদরাসায় সনাতন ধর্মের বাংলা অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের দায়িত্ব প্রদানে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, আশা করছি বিষয়টির আশু সমাধান ও মাদরাসার স্বকীয়তা বজায় রাখার নিমিত্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগণ অনতিবিলম্বে নীতিমালা ও অন্যান্য নথিপত্র সংশোধনপূর্বক স্থায়ী সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এছাড়া, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছীনের নেতৃবৃন্দ বিষয়টি তদারকি ও দ্রুত সমাধানকল্পে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে সক্রিয় ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান।

মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতিসহ পরিচালনা কমিটির সকল সদস্যকে কালবিলম্ব না করে অতিসত্বর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে প্রকৃত আলেমকে দায়িত্ব প্রদানের আহ্বানও জানান তাঁরা।

ভবিষ্যতে মাদরাসা প্রিন্সিপাল/ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগ ও ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব প্রদানের পূর্বে যাতে মাদরাসার স্বকীয়তা অক্ষুণ্ণ থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে জমিয়াতুল মোদাররেছীনের বিবৃতিতে।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *