বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক: উগ্রবাদীদের সাথে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা না থাকার দাবি করেছে পাহাড়ে নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। সংগঠনটির এক নেতা বলেছেন, স্থানীয় জনগণের ক্ষয়ক্ষতির কথা চিন্তা করে যৌথ বাহিনীর চিরুনি অভিযানের মুখে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে দুর্গম পাহাড়ের একটি অজ্ঞাত স্থান থেকে দেয়া এক ভিডিওবার্তায় কেএনএফ একথা বলে।
প্রায় তিন মিনিটের ওই ভিডিওবার্তায় দেখা যায়, পিছনে দুজন তাদের সশস্ত্র সদস্যকে পাহারায় রেখে বক্তব্য দিচ্ছেন কালো মুখোশ পরিহিত সংগঠনের এক নেতা। তবে মুখোশ পরিহিত ওই নেতা সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নাথান বম কিনা তা জানা যায়নি।
ওই নেতা বলেন, সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশে কেএনএফ পাহাড়ে চলমান সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
এমন একটি সময় কেএনএফ এই ভিডিওবার্তা দিয়েছে যখন পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও মিয়ানমার সীমান্ত জুড়ে সেনাবাহিনী ও র্যাবের চিরুনি অভিযান চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে এটিই সন্ত্রাসবিরোধী সবচেয়ে বড় অভিযান।
ভিডিওবার্তায় ওই নেতা বলেন, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি কৌশলগতভাবে নিরাপত্তা বাহিনীকে উগ্রবাদ-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে ভুল বুঝিয়ে কেএনএফের বিরুদ্ধে এই অভিযানটি লেলিয়ে দিয়েছে। মূলত কেএনএফ একটি শান্ত সংগঠন।
সংগঠনটির ওই নেতা অভিযোগ করে বলেন, মূলত পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টি করে চলেছে জনসংহতি সমিতি। তারা এলাকায় বাঙালিসহ বহু জাতি-গোষ্ঠীর মানুষকে হত্যা করেছে। পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টি করে চলেছে।
শান্তি চুক্তি পূর্ণাঙ্গতা না পাওয়ার জন্য সন্তু লারমাকে দায়ী করে ভিডিওবার্তায় ওই নেতা বলেন, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন সংগঠনের সদস্যরা খুবই কম অস্ত্র জমা দিয়েছেন। বরং তারাই সেনাবাহিনীর উপর সশস্ত্র হামলা করে তার দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে কেএনএফের উপর। ওই হামলার পরেই পাহাড়ে কেএনএফের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।
অভিযানে বোম জাতি-গোষ্ঠীর কয়েকজন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে তারা দাবি করেন।
এদিকে, বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলা সংলগ্ন শিপ্পি পাহাড়, সাইজাম পাড়া, রনিন পাড়া, কেউক্রাডং পাহাড়ের পাদদেশসহ রাইক্ষ্যং ভেলির বিস্তীর্ণ এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই অভিযানের ফলে পর্যটকদের উপর অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে এই আশঙ্কায় বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় পর্যটকদের যাতায়াত আপাতত বন্ধ রয়েছে।
র্যাবের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পাহাড়ে উগ্রবাদী সংগঠনের তৎপরতার বেশ কিছু প্রমাণ মিলেছে।
তবে পাহাড়ের কোন সশস্ত্র সংগঠনের সাথে উগ্রবাদীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে তা তিনি জানাননি।