বিহার নিউজ ডেস্ক: বিরোধীদের বৈঠকে পূর্বাঞ্চলীয় দলগুলির মধ্যে মমতার গুরুত্ব অনেকটাই বেশি। কারণ পূর্বাঞ্চলে রাজ্যসভা এবং লোকসভা মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তৃণমূলের হাতে রয়েছে ৩৫ জন সাংসদ। ঠিক ছিল প্রধানমন্ত্রীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিয়ে নীতীশ কুমারের সঙ্গে দেখা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি থেকে সোজা পটনায় আসবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার দিল্লির সেই বৈঠক হয়ে গিয়েছে। মমতা-সহ ১১ জন মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে যোগ দেননি। তবে দিল্লিতে না গেলেও মমতার পটনা যাওয়ার পরিকল্পনা বদলাচ্ছে না। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ১২ জুন বিজেপি বিরোধী দলগুলির বৈঠক বসছে বিহারে। সেই বৈঠকে যোগ দিতে ১১ তারিখেই কলকাতা থেকে পটনার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন মমতা।
সম্প্রতি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কলকাতায় এসে দেখা করে গিয়েছেন মমতার সঙ্গে। সেই বৈঠকে বিরোধী জোটের সলতে পাকানো বিহার থেকেই শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন নীতীশ। তার পর থেকে বিহারে নীতীশের তত্ত্বাবধানে বিরোধী বৈঠকের কথা চলছিল। সেই বৈঠক আগামী ১২ জুন হতে চলেছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী জেডিইউ প্রধান নীতীশ ছাড়াও ওই বৈঠকের আয়োজকের ভূমিকায় থাকছেন আরজেডি নেতা তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী প্রকাশ যাদব।
পটনায় বিজেপি বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলের এই বৈঠকে থাকার কথা। এ ছাড়া থাকার কথা, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্তালিন, কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জম্মু এবং কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা এবং ফারুক আবদুল্লা, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারেরও। তবে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী সিপিএমের পিনারাই বিজয়ন থাকছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। যদিও শনিবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর নীতি আয়োগের বৈঠকে যাননি পিনারাই বিজয়ন এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের অশোক গহলৌতও।
বিরোধীদের এই বৈঠকে পূর্বাঞ্চলীয় দলগুলির মধ্যে মমতার গুরুত্ব অনেকটাই বেশি। কারণ, পূর্বাঞ্চলে রাজ্যসভা এবং লোকসভা মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তৃণমূলের হাতে সরকারি হিসাবে রয়েছে ৩৫ জন সাংসদ। তবে এর মধ্যে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী, যিনি কাঁথির সাংসদ এবং তাঁর পুত্র দিব্যেন্দু অধিকারী যিনি তমলুক থেকে গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তিনিও রয়েছেন। ফলে খাতায় কলমে ৩৫ সাংসদ হাতে থাকলেও এই দুই সাংসদকে কার্যক্ষেত্রে না ধরারই পক্ষপাতি রাজনৈতিক কারবারিদের একটি অংশ।
তবে পটনার বৈঠকে কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি যোগ দেন কি না, সে দিকেও আলাদা নজর থাকবে। কারণ, ইতিমধ্যেই মমতা তাঁর রেড রোডের ধর্না মঞ্চ থেকে কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’ সহ্য করবেন না জানিয়ে তাঁদের ছাড়াই বিরোধী জোটের ডাক দিয়েছেন। আবার বিভিন্ন সময়ে অন্য বিরোধী দলগুলিও কংগ্রেসের ছত্রছায়ার বাইরে গিয়ে বিরোধী ঐক্যের কথা বলেছে।
এই আবহে লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে পটনায় বসতে চলেছে বিরোধীদের বৈঠক। বৈঠকে কারা যোগ দিলেন এবং তাঁদের আলোচনা কী নিয়ে হতে চলেছে, সে দিকে নজর থাকবে রাজনীতির কারবারিদের।