সিরাজুল আলম খানের দাফন হবে মায়ের শাড়িতে মুড়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ খ্যাত সিরাজুল আলম খান (দাদা ভাই) আর নেই। শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সিরাজুল আলম খানের ব্যক্তিগত সহকারী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘দুপুর সোয়া ২টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে মারা যান তিনি।’এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে সিরাজুল আলম খানকে আইসিইউ থেকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। গত ৭ মে রাতে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে রাজধানীর পান্থপথে শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সিরাজুল আলম খানকে। এরপর ২০ মে তাকে ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ৮২ বছর বয়সী এই রাজনীতিক অনেক দিন ধরে উচ্চ রক্তচাপসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। এর আগে ২০২১ সালেও অসুস্থ হয়ে কিছুদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। চিরকুমার সিরাজুল আলম খান দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়েছেন। ১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক হওয়া সিরাজুল আলম খান ১৯৬৩ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। জাতীয়তাবাদী চেতনাকে বিকশিত করে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ’৬২ সালে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে যে নিউক্লিয়াস গড়ে উঠে তিনি ছিলেন তার মূল উদ্যোক্তা। এই নিউক্লিয়াসের সদস্য ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদ। স্বাধীন হওয়ার পরপরই শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে সিরাজুল আলম খানের বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। সিরাজুল আলম খানের অনুসারী ছাত্রলীগ ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠন করে। তিনি কখনও মূল নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিত। তাকে সবাই ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকতেন।
সিরাজুল আলম খানের দাফন হবে মায়ের শাড়িতে মুড়ে
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে সিরাজুল আলম খানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) দপ্তর সম্পাদক কামরুল আহসান অপু এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররমে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে নোয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে। বাদ আছর বেগমগঞ্জ উপজেলার বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে আলিপুর গ্রামের সাহেববাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে সিরাজুল আলম খানের দাফন সম্পন্ন হবে। মরহুম রাজনীতিবিদের ছোটভাই ফেরদৌস আলম খান জানান, দাদাভাইর ইচ্ছা অনুযায়ী মায়ের শাড়িতে মুড়িয়ে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে। সিরাজুল আলম খান বলে গিয়েছিলেন, আমার মৃত্যুর পর কোনো শোকসভা হবে না। শহীদ মিনারে ডিসপ্লে হবে না লাশ। যত দ্রুত সম্ভব নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আমার গ্রামের বাড়িতে পাঠাতে হবে মরদেহ, যা ঢাকা থাকবে একটা কাঠের কফিনে। মায়ের একটা শাড়ি রেখে দিয়েছি। কফিনটা শাড়িতে মুড়ে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে, মায়ের কবরে।





