শিরোনাম
বৃহঃ. ডিসে ৪, ২০২৫

১৪ ফ্লাইট বাতিল, হজে যেতে পারেননি সাড়ে ৫ হাজার যাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: নানা জটিলতায় একের পর এক বাতিল হচ্ছে চলতি বছরের প্রি হজ ফ্লাইট। সোমবার পর্যন্ত মোট ১৪টি হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ৯টি, সৌদিয়া এয়ারলাইনসের ৫টি ফ্লাইট রয়েছে। সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় শেষ মুহূর্তে সাড়ে ৫ হাজার হজযাত্রী সৌদিতে যেতে পারেননি। হজ মন্ত্রণালয় ও হজ অফিস সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরুর পর এখন পর্যন্ত ১৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে মদিনাগামী ফ্লাইট বাতিল হয়েছে ১১টি। হজ এজেন্সিগুলো নির্ধারিত সময়ে টিকিট না কাটা, মদিনাগামী যাত্রী না পাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, সৌদি আরবের ‘সৌদিয়া’ ও ‘ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। সেখানে চলতি বছরের হজের ফ্লাইট সম্পর্কে জানতে চান প্রতিমন্ত্রী।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ২৬ মে দুটি, ২৮, ২৯ মে একটি করে, ৩১ মে দুটি, ৩ জুন দুটি, ৬ জুন দুটি, ৮ জুন একটি, ৯ জুন একটি ও ১১ জুন দুটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। আরও কয়টা ফ্লাইট বাতিল হতে পারে জানতে চাওয়া হলে বিমান সঠিক তথ্য দিতে না পারলেও, সামনে আরও ফ্লাইট বাতিল হবে এমনটি জানানো হয়। যার প্রেক্ষিতে যতগুলো ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, তা সমন্বয় করতে অতিরিক্ত ১০টি ফ্লাইটের স্লট বরাদ্দ চেয়েছে বিমান।

বৈঠকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম জানান, বিমানের যে কটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে সব কটি হজ এজেন্সির গাফিলতির কারণে। তারা টিকিট বুকিং দিয়েও শেষ মুহূর্তে হজযাত্রী দিতে পারেনি। এ ছাড়া ৩০ শতাংশ মদিনাগামী যাত্রী দেয়ার কারণে চলতি বছর নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে। এসব কারণে ২২ জুন শেষ ফ্লাইটের পর আরও অতিরিক্ত ১০টি ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য হজ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান তিনি। বিষয়টি প্রতিমন্ত্রী আমলে নেন এবং হজ অনুবিভাগকে এ বিষয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। একই বক্তব্য দেয় সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস।

বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো অবস্থাতেই হজ ফ্লাইট ২৪ জুনের পর করা যাবে না। এর মধ্যে সব হজযাত্রীকে সৌদিতে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন সংশ্লিষ্টদের।

এর আগে গত ৫ জুন কতটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে এবং ওই সব ফ্লাইটে কোন কোন এজেন্সি টিকিট বুকিং দিয়েছিল তা জানতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে চিঠি দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ক্যাপাসিটি লস পূরণে বিমানকে ১০টি অতিরিক্ত ফ্লাইটের জন্য এবং সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইনসকে সৌদি সিভিল অ্যাভিয়েশনের (জিএসিএ) কাছে আবেদন করতে বলেছে মন্ত্রণালয়।

হজ অফিস (আশকোনা) পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, যে ১৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, কেন বাতিল হয়েছে তার কারণ জানতে আজকে এই বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বিমান ফ্লাইট বাতিলের কারণ বলেছে। এরপর তারা নতুন কয়েকটি ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য অনুমতি চেয়েছে। তাদের অনুমতির কারণ অনেকটা যৌক্তিক মনে হয়েছে বলে আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং সে অনুযায়ী সিভিল অ্যাভিয়েশনের (জিএসিএ) কাছে আবেদন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে নতুন ফ্লাইটের অনুমতি মিলবে।

ফ্লাইট সূচি অনুযায়ী, আগামী ২২ জুন সৌদি আরবে হজযাত্রার শেষ ফ্লাইট যাবে। আর হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২ জুলাই, শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২ আগস্ট। এ বছর প্রি-হজ ফ্লাইটে মোট ১৬০টি ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করবে বাংলাদেশ বিমান। এর মধ্যে ঢাকা-জেদ্দা রুটে ১১৬টি, ঢাকা-মদিনা রুটে ২০টি, চট্টগ্রাম-জেদ্দা রুটে ১৪টি, চট্টগ্রাম-মদিনা রুটে ৬টি, সিলেট-জেদ্দা ও সিলেট-মদিনা রুটে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন বা ২৮ জুন পবিত্র হজ পালিত হেব। বাংলাদেশে থেক এবার এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজ পালনে যাচ্ছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *