শিরোনাম
বৃহঃ. ডিসে ৪, ২০২৫

বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে কোনোদিন বিশ্বাস করে না: মঈন খান

  • বিএনপি লগি বৈঠার রাজনীতি করে না।
  • বাকশালী রাজনীতি কর্পূরের মত উড়ে যাবে।
  • সাইবার নিরাপত্তা আইন ‘নতুন বোতলে পুরনো ডিএসএ।
  • সরকার শুধু অর্থনীতিতে ব্যর্থ হয় নাই, কূটনীতিতেও ব্যর্থ।
  • আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, আমরা এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই।
  • তারেক রহমান বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের কাছে পৌঁছে গেছেন।

বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক: বিএনপি ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগ এক রাতের মধ্যে ‘শেষ হয়ে যাবে’ বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন, তার জবাবে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক তথ্য মন্ত্রী আবদুল মঈন খান বলেছেন, “বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে কোনোদিন বিশ্বাস করে না, লগিবৈঠার রাজনীতিতে বিএনপি কোনো দিন বিশ্বাস করে না।”

হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ কর্তৃক তারেক রহমানের সাম্প্রতিক সব বক্তব্য অনলাইন থেকে সরাতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার ‘ভয় পাচ্ছে’ বলেই তারেক রহমানের বক্তব্য অনলাইন থেকে সরানোর নির্দেশ এসেছে আদালত থেকে।“এতো ভয় কেন? একজন মানুষকে কেন ভয়? তার কারণ তিনি (তারেক রহমান) আজকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের কাছে পৌঁছে গেছেন এবং এই সরকার আজকে জনগণকে ভয় পায়।”

মঈন খান আরও বলেন, “বেগম খালেদা জিয়াকে কেন মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করেছে। আজকে স্পষ্টভাষায় আমাদের এটা বুঝতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে এই সরকার ভয় পায়। কেনো ভয় পায়? দেশনেত্রী বেগম জিয়া গণতন্ত্রের কথা বলেন এই কারণে। সরকার ভেবেছিল, বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে দিলে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ তারা চুপ হয়ে যাবে, তারা আর গণতন্ত্রের কথা বলবে না। আসলে এটা তো অলিক কল্পনা, এটা তো হতে পারে না। পৃথিবীর কোনো সরকার কি পেরেছে? কোনো সরকার, তার যত বন্দুক, কামান, গোলা থাকুক না কেনো, তারা কি মানুষের ভাষাকে বন্ধ করে দিতে পেরেছে? পারেনি। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে, বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন চুপ করে থাকে না।”

ব্রিকসের সদস্যপদ না পাওয়াকে সরকারের ‘কূটনৈতিক ব্যর্থতা’ উল্লেখ করে আবদুল মঈন খান বলেন, “এই সরকার আজকে শুধু অর্থনীতিতে ব্যর্থ হয় নাই, কূটনীতিতেও ব্যর্থ। সরকার বড়াই করে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিল, সেখানে ব্রিকসের মেম্বার হবে। আজকে কেন আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র যারা ব্রিকসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন, কেন তারা আজকে চরম বন্ধু রাষ্ট্র হয়েও আমাদেরকে প্রত্যাখান করল?”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “বাস্তবতা হচ্ছে, এই যে লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করে দিয়ে লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে তারা বাংলাদেশকে অর্থনীতির দিক থেকে ফোকলা করে দিয়েছে, সেই ফোকলা হওয়ার কারণে আজকে কোনো যুক্তি দিয়ে বাংলাদেশকে তারা এখন ব্রিকসের সদস্য পদ দিতে পারে নাই। আমি জানি না, আজকে থেকে কত বছর পরে আবার আবেদন করবে এই দেশ এবং ব্রিকসের সদস্য হবে সেটা পরবর্তী প্রজন্মের দেখার বিষয়। কিন্তু এটুকু আমরা বলতে পারি যে, আজকে যেভাবে বিশ্ব পরিমণ্ডলে আমাদেরকে প্রত্যাখান করছে, বাংলাদেশকে সদস্যপদ দেয়নি, আজকে লজ্জায় আমাদের মাথা কোথায় রাখি!”

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে, তাকে ‘নতুন বোতলে পুরনো ডিএসএ’ হিসেবে বর্ণনা করেন মঈন খান। তিনি বলেন, “পৃথিবীর ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, মানুষের কণ্ঠরোধ কেউ করতে পারে না। মানুষ কথা বলবে, মানুষ ন্যায়ের কথা বলবে, মানুষ সত্য কথা বলবে, মানুষ স্বাধীনতার কথা বলবে, মানুষ গণতন্ত্রের কথা বলবে, মানুষ সুশাসনের কথা বলবে, মানুষ মানবাধিকারের কথা বলবে। এই কথা কেউ কোনো দিন বন্ধ করতে পারবে না। যে আইন করুক, যে নির্দেশ দেক সেগুলো দেখবেন আপনা-আপনি কর্পূরের মতো উড়ে যাবে।”

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, “বাংলাদেশে মানুষের যে আন্দোলন, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সেই আন্দোলনের সামনে এই সরকারের সকল অপকর্ম-ধাপ্পাবাজি বাকশালী রাজনীতি সব কর্পূরের মত উড়ে যাবে।”তিনি আরও বলেন, “আমাদেরকে অনেকে জোক করে বলেন, ‘আরে আপনারা কি আন্দোলন করছেন? আপনারা তো আজ পর্যন্ত কঠিন আন্দোলন দিতেই পারলেন না।’ আমরা বিগত এক বছর ধরে বাংলাদেশে যে কঠিন আন্দোলন করেছি এর চেয়ে কঠিন, শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন আপনারা শত বছরের ইতিহাসেও দেখেননি।”

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর পরও বলতে হয় আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে তারা স্বৈরাচারী শাসন করে যাচ্ছে। এই আওয়ামী লীগকে জনগণের মুখোমুখি হতে হবে। জনগণ তাদের প্রশ্ন করবে, তারা কেন দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা গঠন করেছে।

সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ’৭১-এর ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মঈন খান বলেন, “আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, আমরা এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। সেই কারণে আমাদের যে মেথোডলজি, যে পদ্ধতি, সেই পদ্ধতিও শতকরা একশ ভাগ গণতন্ত্রী। সেটা অনুসরণ করেই আমরা বিগত একবছর যাবত আন্দোলন করে যাচ্ছি। আগামীতে আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে নৈতিকভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করব।”

জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম’৭১ এর সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *