।। হাসনাত আরিয়ান খান ।।
সাংবাদিকতা হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও মানবিক চেতনা বিকাশের কেন্দ্র এবং নীতি-নৈতিকতা, দায়-দায়িত্ব ও বুদ্ধি-বিবেকের আধার। সাংবাদিকতা হচ্ছে সাহিত্য, আর্ট, সায়েন্স, ইন্ডাস্ট্রি ও কর্মাসের সমবায়। সংবাদপত্র হচ্ছে ‘ফোর্থ স্টেট’। স্বাধীনতা-স্বার্বভেীমত্ব, জাতীয় স্বার্থ, মানবাধিকার উন্নয়নে ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণে,গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করণে সাংবাদিক এবং সংবাদপত্রের ভুমিকা সবচেয়ে বেশি। নাগরিকদের রাজনৈতিক জ্ঞান অর্জনের যত উপায় আছে, তার মধ্যে সংবাদপত্রের স্থান সর্বাগ্রে। তাই সৃজনশীল গণমাধ্যম ও সম্মানজনক পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা পেশা অগ্রগণ্য। এই অগ্রগণ্য পেশার মানুষগুলোকেও হতে হয় সর্বক্ষেত্রে অগ্রগণ্য। অথচ বাংলাদেশে সাংবাদিক হতে কোনো যোগ্যতা লাগে না, সম্পাদক হতেও লাগে না। অবশ্য সাংবাদিক বা সম্পাদক হওয়ার যে সত্যিকারের যোগ্যতা তা কাগুজে সার্টিফিকেট দিয়েও হয় না। তাই নির্ধারিত যোগ্যতাও এক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক। আর এই সুযোগে সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা মূর্খরাও সাংবাদিক বনে যান। আর অর্থ থাকলে কোনদিন সাংবাদিকতা না করেও অনেকেই সম্পাদক বনে যান। যিনি মালিক, তিনিই হয়ে যান সম্পাদক। ফলে ‘সাংবাদিকতা পেশা’র ধারণাটাই দাঁড়ায় না। সাংবাদিকতা পেশা যে কতটা কঠিন পেশা, তা তিনি নিজেও জানেন না। যাই হোক, আজকে আমি সেদিকে যাচ্ছি না। আজকে আমি সাংবাদিকতা পেশায় আছেন বা আসতে চান, সাংবাদিকতা সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিতে চান বা সাংবাদিকতা করতে চান, এমন অসংখ্য তরুণ-তরুণীদের একটি বইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে লিখতে বসেছি।
বইয়ের নাম: “সাংবাদিকতার সহজ পাঠ”
লেখকঃ সিদ্দিকুর রহমান নির্ঝর
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান: নির্ঝর প্রকাশ
বইয়ের পৃষ্ঠা: ১৪৪
মূল্য: ৩০০ টাকা
যেসব শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা সাংবাদিকতা পেশায় আসতে ভয় পাচ্ছেন কিংবা সাংবাদিকতা পেশায় থেকেও হতাশায় ভুগছেন যে না আমাকে দিয়ে হচ্ছে না, আমি পারবোনা, আমার মুক্তি দরকার ইত্যাদি ইত্যাদি তাদেরকে বলছি আপনাকে দিয়েই হবে এবং অন্যদের থেকে অনেক বেশি হবে। প্রতিটি মানুষের ভেতরেই অনেক ধরনের প্রতিভা সুপ্ত অবস্থায় থাকে, প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বের করে আনা, আপনার শুধু প্রয়োজন সঠিক দিক নির্দেশনা। আর এই সঠিক দিক নির্দেশনা দিতেই বাংলাদেশে ও বিলেতে দীর্ঘদিনের প্রায় তিন দশকের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক ও “ভয়েস অব পিপল” নিউজ পোর্টালের সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান নির্ঝর “সাংবাদিকতার সহজ পাঠ” নামে একটি বই প্রকাশ করেছেন। মূলত সাংবাদিকতা পেশার শিক্ষার্থী এবং দেশ-বিদেশে কর্মরত বাংলাভাষী শিক্ষানবিশ সাংবাদিকদের কথা মাথায় রেখে বেশ সহজ সরল ও প্রান্জল ভাষায় বইটি লেখার চেষ্টা করেছেন।
মোট ১৪টি অধ্যায়ে বইটিকে তিনি ভাগ করেছেন। সাংবাদিকতায় প্রতিদিন নতুন নতুন প্রযুক্তি যুক্ত হলেও সাংবাদিকতার মৌলিক বিষয়সমূহ অভিন্ন ও অপরিবর্তনশীল। যেমন- সংবাদ কি, সংবাদ ও গণমাধ্যম কত প্রকার ও কি কি, সংবাদের স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য, খবর ও অ-খবরের পার্থক্য, সংবাদের উৎস, সংবাদ পত্রের লক্ষ্য ইত্যাদি। তাই এই বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে সংবাদের নানান প্রয়োজনীয় দিক আলোকপাত করা হয়েছে। সাংবাদিকতার অন্যতম একটি মৌলিক বিষয় সংবাদ সম্পাদনা। বইটিতে সংবাদ সম্পাদনার নানান কৌশল অত্যন্ত সুন্দর, প্রাঞ্জল ও মনোজ্ঞ ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। বইয়ের লেখক সংবাদ ও সাংবাদিকতা কি এ সম্পর্কে যেমন আলোকপাত করার চেষ্টা করেছেন, তেমনি কিভাবে রিপোর্ট লিখতে হয়, সম্পাদকীয় লিখতে হয় বা সম্পাদনা করতে হয় সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখার নিয়ম-কানুন ও কৌশল নিয়ে তিনি একটা পুরো অধ্যায়জুড়ে প্রাঞ্জল ভাষায় আলোচনা করেছেন।
প্রখ্যাত সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমেদ বলেছেন, ‘প্রুফরিডিং কেবল টেকনিক্যাল জ্ঞানের বিষয় নয়, এটা একটা বিশেষ আর্ট, জ্ঞানের চেয়ে দক্ষতা ও নিপুণতা এ কাজে অধিক আবশ্যক।’ লেখক বইটিতে প্রুফ রিডিং নিয়ে আলাদা একটা অধ্যায় রচনা করে সংক্ষেপে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছেন। বইটিতে প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় অনলাইন মিডিয়া সম্পর্কেও শিক্ষার্থীদের সংক্ষেপে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। টেলিভিশন সাংবাদিকতা মূলত প্রযুক্তি আর কারিগরি জ্ঞাননির্ভর। তার সাথে দরকার হয় সাংবাদিকতা জ্ঞানের মিশেল। ‘টেলিভিশন সংবাদ ও সাংবাদিকতা’ নিয়ে নবীন সাংবাদিকদের জন্য তিনি অত্যন্ত সহজ ও বোধগম্য ভাষায় একটি অধ্যায় রচনা করেছেন। রির্পোর্টার, নিউজরুম এডিটর কিংবা নিউজকাস্টার হতে হলে কি করতে হবে, কতটা দক্ষতা দরকার হয়, সে সম্পর্কেও কার্যকর আলোচনা করেছেন।
বইয়ের শেষের দিকে তিনি বর্তমান সময়ে আলোচিত অনলাইন সাংবাদিকতা নিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা করেছেন। অনলাইন সংবাদপত্রের কার্যধারা গতানুগতিক সংবাদমাধ্যমের সংবাদকক্ষের কার্যধারা থেকে অনেকটাই আলাদা। অনলাইন সংবাদকক্ষে নিত্যদিন যুক্ত হচ্ছে নিত্যনতুন প্রযুক্তি। বইটিতে মূলত অনলাইন সাংবাদিকতার মৌলিক কিছু বিষয় উদাহরণসহ সহজ-সরল ভাষায় বলার চেষ্টা করা হয়েছে। বইটিতে নবীন সাংবাদিকদের জন্য অত্যন্ত চমৎকারভাবে অনলাইন সংবাদপত্রের কার্যধারা তুলে ধরা হয়েছে। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ তাঁর ইউকিলিক্স-কাণ্ডে দেখিয়ে দিয়েছেন অনলাইন সাংবাদিকতা চাইলে কী করতে পারে! এডওয়ার্ড স্নোডেন তাঁর গুপ্তচরবৃত্তির পরিসর ভেঙে অনলাইন দুনিয়ার নতুন চেহারা হাজির করেছেন। অনলাইন সাংবাদিকতা তাই আজ মোবাইল জার্নালিজম, ডাটা জার্নালিজম, সাংবাদিকতায় প্রোগ্রামিংয়ের ব্যবহারসহ নানা মাত্রায় নতুন নতুন রূপ হয়ে আমাদের সামনে হাজির হচ্ছে। সাংবাদিকতার জন্য এটি একটি মহা-চ্যালেঞ্জ। এই আধুনিকতার সঙ্গে সাংবাদিকতাকে যুক্ত করতে না পারলে বা নিজেকে প্রশিক্ষিত না করলে গ্লোবাল চ্যালেঞ্জে টিকে থাকা অসম্ভব। বইটি তিনি এতো সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষায় লিখেছেন, যে কেউ প্রথমবার পড়ে সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জেনে নিতে পারবেন।
১৪৪ পৃষ্ঠা বিশিষ্ট “সাংবাদিকতার সহজ পাঠ” বইটিতে লেখক একজন সাংবাদিক কেমন হবেন, কীভাবে শুরু করবেন, কীভাবে একটি রিপোর্ট করবেন, কর্মরত সাংবাদিকদের পদবি ও কাজের বিবরণ, কাজের সন্মানী, কর্মরত সাংবাদিকদের পদবী ও দায়িত্ব, হলুদ সাংবাদিকতা, ভালো ফিচার লেখার কলাকৌশল, ফটো জার্ণালিজম, সাক্ষাৎকার গ্রহণের কলাকৌশল, দেশ-বিদেশে সাংবাদিকতা বিষয়ক পড়াশোনার তথ্য ইত্যাদি ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করেছেন। মোদ্দাকথা সাংবাদিকতার প্রায় সকল নাড়ি-নক্ষত্র সম্পর্কেই তিনি বইটিতে সংক্ষেপে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছেন। বইটিতে বাংলাদেশ ও বিশ্ব সংবাদ পত্রের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও তিনি তুলে ধরেছেন। বইটির ভূমিকাংশেও লেখক বইটি সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা তুলে ধরেছেন।
আসলে সংবাদমাধ্যমের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সৎ, সত্যনিষ্ঠ, পক্ষপাতমুক্ত সাংবাদিকতা। সংবাদপত্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো দল নিরপেক্ষ সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। সংবাদপত্রকে প্রমাণ করতে হবে কারও প্রতি পক্ষপাত নেই, কারও বিরুদ্ধে বা কারও পক্ষে কোনো অ্যাজেন্ডা নেই। সেটা সম্ভব হলেই সর্বস্তরের পাঠক সেই পত্রিকাকে গ্রহণ করবেন। সংবাদপত্র যতবেশি নিরপেক্ষ হবে এবং সাংবাদিকরা যত বেশি নির্ভীক ও সৎ হবে দেশ ও জাতির তত বেশি মঙ্গল হবে। আর সেজন্যই তো সাংবাদিকদের সমাজের অতন্দ্র প্রহরী বা ‘গেট কিপারস’ বলা হয়। গণমাধ্যমকে সব সময় মনে রাখতে হবে, সেই অন্যকে সুন্দর ও সঠিক পথে প্রভাবিত করবে। কিন্তু নিজে কখনো ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হবে না। অন্যায়-অসত্যের কাছে নতি স্বীকার করবে না। একটি গণমাধ্যম ততটাই সাহসী, যতটা তার সম্পাদক। এজন্য সম্পাদককে প্রজ্ঞায় সবার চেয়ে আলাদা থাকতে হবে। সম্পাদক হিসেবে তাঁকে পক্ষপাতহীন হতে হবে। লেখায়, চিন্তায় যেন নির্দোষ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। তাকে সাহসী হতে হবে, দায়িত্বশীল হতে হবে। সব দলের-মতের ভালো-মন্দ সবটাই একজন সম্পাদকের চোঁখে পড়তে হবে। সব দলের, সব মতের, সব মানুষের ভুল বা বিচ্যুতি তার চোঁখে পড়তে হবে। তাঁর বিবেক-বিবেচনা হতে হবে প্রখর, তাঁর সততা হতে হবে প্রশ্নাতীত। তাঁর প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মীর দায়িত্ব তাকে নিতে হবে, ছাপা হওয়া প্রতিটি অক্ষরের দায়িত্ব নিতে হবে। ভুল করলে তা শুধরে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ভয় এবং পক্ষপাতের ঊর্ধ্বে উঠে তাঁকে ভাবতে হবে। সিদ্দিকুর রহমান নির্ঝরের “সাংবাদিকতার সহজ পাঠ” বইটি পড়ে পাঠক জানতে পারবেন সাংবাদিকতা শুধু একটি ব্যবহারিক বিষয় না, এটি পড়াশোনারও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। যদি তা টেলিভিশন সাংবাদিকতা হয়, তাহলে তো আরও বেশি জোরের সাথে নিতে হয়। সংবাদ, সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা, শব্দত্রয় শুধু টেলিভিশন মিডিয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব বহন করে না, এটি প্রিন্ট ও অনলাইন মাধ্যমেও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
জীবিত থাকতে বইটির পান্ডুলিপি পড়ে খ্যাতিমান লেখক-সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তাঁর মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “বইটি পড়ে আমি অভিভূত হয়েছি। আজকাল দেখছি অনেকেই কোন পরিকল্পনা, পড়াশোনা, অভিজ্ঞতা ছাড়াই সাংবাদিক বনে যাচ্ছেন। এর ফলে সাংবাদিকতার মধ্যে অপসাংবাদিকতা ঢুকে পড়েছে। নির্ঝরের এই বইটি নব্য ও লব্ধপ্রতিষ্ঠ সাংবাদিকদের ব্যাপক কাজে লাগবে। সাংবাদিকতা সংক্রান্ত অনেক জরুরি বিষয় তিনি ছোট ছোট করে এ গ্রন্থে সন্নিবেশিত করেছেন। গ্রন্থটি হতে পারে সাংবাদিকতা বিষয়ক শিক্ষার্থী ও তরুণ সাংবাদিকদের জন্য এক অনন্য সহায়ক গ্রন্থ।… আমার দৃঢ বিশ্বাস, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাংবাদিকতাও গণযোগাযোগ বিভাগে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষানবিশ সাংবাদিকগণের এ গ্রন্থটি খুবই উপকারে আসবে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙালি সাংবাদিকদের জন্য সংগ্রহে রাখার মতো একটি মূল্যবান গ্রন্থ এটি।”
তবে সমালোচনার উর্ধ্বে নয় এই বইটি। বইটি লিখতে গিয়ে বেশ কিছু তথ্যের যথাযথ সূত্র ব্যবহার করতে যেমন লেখক ভুলে গেছেন। তেমনি অনলাইন সাংবাদিকতার সাংগঠনিক কাঠামো, মোবাইল সাংবাদিকতা, ডাটা জার্নালিজম, পডকাস্ট, সংবাদপত্রে প্রযুক্তির বিবর্তন ও আধুনিক সমাজে গণমাধ্যমের প্রভাব ইত্যাদি বিষয়ে লিখতেও তিনি ভুলে গেছেন। আশাকরি, রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহারের প্রয়োজনে পরবর্তী সংস্করণে লেখক এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি কাটিয়ে উঠবেন। এছাড়া বইটি পড়তে গিয়ে বেশ কিছু জায়গায় ভুল বানান পরিলক্ষিত হয়েছে। তেমনি ‘লেখকের কথা’ শিরোনামে বইয়ের ভূমিকাটাও বেশ দীর্ঘ লেগেছে। বিলাত থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদ পত্রের তালিকাসহ এমন আরও কিছু বিষয় আমার কাছে অসম্পূর্ণ ও অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। পরবর্তী সংস্করণে লেখক এসব ছোটখাটো ভুল ত্রুটিগুলো শুধরে নিলে ভালো করবেন। আশাকরি দ্বিতীয় সংস্করণে অপ্রয়োজনীয় কিছু বিষয় বাদ দিয়ে প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত সাংবাদিকদের অনুসরণীয় আচরণবিধি ও মোবাইল জার্ণালিজম, ডাটা জার্নালিজম, পডকাস্টসহ প্রয়োজনীয় আরও কিছু বিষয় অর্ন্তভুক্ত করে বইটিকে লেখক আরও বেশি আকষণীয় করে তুলবেন এবং শিক্ষার্থীদের কাছে বইটিকে আরও বেশি প্রয়োজনীয় করে তুলবেন।
বইটি পড়তে পড়তে আমি টের পেয়েছি যে বইটিতে বিভিন্ন তথ্য সন্নিবেশিত করতে গিয়ে লেখক অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। সাংবাদিকতার এই যুগসন্ধিক্ষণে বইটি পাঠ করে সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীরা লাভবান হবে। যারা সাংবাদিকতায় শিক্ষানবিশ তাদের জন্য বইটি অত্যন্ত সহায়ক হবে। বইটি সাংবাদিক বা গণমাধ্যমকর্মীদের সম্পর্কে একজন সাধারণ পাঠকেরও অনেক কৌতূহল মেটাবে। সেইসাথে বেলাইনে চলা সাংবাদিকতা ও সাংবাদিককে এই বই সাহায্য করবে। বইটি কোন বোদ্ধা বা সিনিয়র সাংবাদিক ও সম্পাদকদের উদ্দেশ্যে লিখিত না হলেও সময় থাকলে বোদ্ধা সাংবাদিকরাও বইটি পড়তে পারেন। বইটি পড়ে ভুলে যাওয়া অনেক বিষয় নতুন করে আবার ঝালিয়ে নিতে পারেন। আমি তথ্যবহুল এই বইটির বহুল প্রচার কামনা করি।
সিদ্দিকুর রহমান নির্ঝরের “সাংবাদিকতার সহজ পাঠ” বইটির প্রথম প্রকাশ- জুলাই, ২০২৩, গ্রন্থস্বত্ব- লেখক নিজে, পৃষ্ঠাবিন্যাস ও মুদ্রক- রিলেটিভ কম্পিউটার গ্রাফিক্স, প্রচ্ছদ করেছেন- লেখক, পরিবেশক- জসিম বুক হাউস, আম্বরখানা, সিলেট। বইটি সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে উৎসর্গ করা হয়েছে। বইটির ভেতরের প্রচ্ছদের গায়ে লেখক পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত পাঠকদের জন্য বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ৩০ পাউন্ড; ইন্ডিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত ক্রেতাদের জন্য বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ২৫ পাউন্ড।
লেখক: প্রধান সম্পাদক, ‘দ্যা গ্রেট বেঙ্গল টুডে’ এবং প্রাক্তন সম্পাদক ও প্রকাশক, ‘দ্যা গ্রেট বেঙ্গল টাইমস’।