আসাম নিউজ ডেস্ক: কংগ্রেসের সাবেক শীর্ষস্থানীয় নেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিবাল আসাম একসময় মিয়ানমারের অংশ ছিল বলে দাবি করেন।
ভারতের সংসদে ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর বহুল বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়। পরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে জনস্বার্থে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) কপিল সিবাল আসাম নিয়ে এ মন্তব্য করেন। তার মন্তব্য ঘিরে প্রবল আলোড়ন শুরু হয়েছে আসামে।
এ দাবির প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসামের বিজেপি নেতারা বলেন, সাবেক কংগ্রেস নেতা ইচ্ছাকৃতভাবে ইতিহাস বিকৃত করছেন।
আসামের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী পীযুষ হাজারিকা বলেন, রাজ্যের ভাবমূর্তি কলুষিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভিত্তিহীন তত্ত্বকে সামনে এনে উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টাও সিবালের বক্তব্যের মধ্যে নিহিত রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬এ ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক পিটিশনের শুনানি শুরু করেছেন ৫ ডিসেম্বর।
এই ধারায় বলা হয়েছে, সব বিদেশি অভিবাসী, যারা ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের মধ্যে ভারতে এসেছিলেন, তারা ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আসামের কিছু আদিবাসী গোষ্ঠী এই ধারা চ্যালেঞ্জ করেছে। তাদের বক্তব্য, এই ধারা বাংলাদেশ থেকে আসা ‘অভিবাসীদের অবৈধ অনুপ্রবেশকে বৈধ করেছে’।
বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর বক্তব্যের পাল্টা বক্তব্য দিচ্ছে আসামের মানুষের একাংশ। তাদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন কপিল সিবাল।
শুনানিতে অংশ নিয়ে কপিল সিবাল বলেন, মানুষের অভিবাসন ইতিহাসে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। একে মানচিত্র দিয়ে বোঝা যায় না। আসাম মিয়ানমারের একটি অংশ ছিল। তারপর ব্রিটিশরা এই অঞ্চলের একটি অংশ জয় করে এবং এভাবেই আসাম ব্রিটিশদের হাতে গিয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মহাকাব্য মহাভারতে উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনো অংশ স্থান পেয়েছে কি না, এ নিয়ে ভারতে দক্ষিণপন্থী ও বামপন্থী ইতিহাসবিদদের মধ্যে বিতর্ক বহুদিনের।
বামপন্থী ইতিহাসবিদদের বক্তব্য, মহাভারতে উত্তর-পূর্ব ভারতকে স্থান দেয়া হয়নি। দক্ষিণপন্থীদের বক্তব্য বিপরীত, তবে বিষয়টি বিতর্কিত। সুপ্রিম কোর্টে বিতর্কের সময় সিবালের এই বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকত্ব আইন নিয়ে নতুন বিতর্কে ইন্ধন জোগাতে পারে।