- অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় মানহানিকর।
- ব্রিটিশ আদালতের রায়ে ঢাকায় উদ্বেগ।
লণ্ডন, ২৬ জুন: বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত (আইসিটি) নামে আন্তর্জাতিক হলেও এটা আন্তর্জাতিক নয়, আন্তর্জাতিক মানের নয়, নিরপেক্ষ নয়, এটাকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় চৌধুরী মুঈন উদ্দিনেরজন্য মানহানিকর বলে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত (আইসিটি) এ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত চৌধুরী মুঈন উদ্দিনেরপক্ষে এক যুগান্তকারী রায় দিয়েছে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় চালানো নৃশংসতার সঙ্গে চৌধুরী মুঈন উদ্দিননের সংশ্লিষ্টতার যে অভিযোগ প্রকাশ করেছিল তা মানহানিকর বলে উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত এসব অভিযোগ সরিয়ে নিতে বলেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাখিল করা বক্তব্যও প্রত্যাখ্যান করেছে। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের মামলা চলবে বলে সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মতভাবে রায় দিয়েছে। উপরন্তু বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত (আইসিটি) এন্টায়ার জুডিশিয়াল সিস্টেমকে নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্ট পরোক্ষভাবে এটাকে জুডিশিয়াল কিলিং বলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত (আইসিটি) কে তুলোধুনো করেছে। শুধু তাই নয় যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট রায়ের বিবরণে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সম্পর্কে বলেছে, এটি একটি দেশীয় (ডমেস্টিক) আদালত। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এটি গঠন করা হয়। এই আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য-প্রমাণের (এভিডেন্স) কঠোর বিধান প্রয়োগ করা হয়নি এবং এ ট্রাইবুনালকে পত্রিকার প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে বিচার করার অনুমোদন দেওয়া হয়।
ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে আইসিটি’র পুরো প্রক্রিয়া এবং এর প্রতিটি বিচারের রায় চূড়ান্তভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হলো। আইসিটি’র বৈশ্বিক সার্বজনীন স্বীকৃতি অর্জনে সরকারের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেলো।
২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন আল-বদর বাহিনীর হয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে যুদ্ধপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পান চৌধুরী মুঈন উদ্দিন। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আসামীর অবর্তমানে বিচারের রায়ে তাকে সন্দেহাতীতভাবে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ফাঁসীর এ দন্ড প্রদান করে। দন্ডপ্রাপ্ত আসামী চৌধুরী মুঈন উদ্দিন ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ায় এবং যুক্তরাজ্যে বসবাস করায় বিচারের এ রায় কার্যকর করা সরকারের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কমিশন ফর কাউন্টারিং এক্সট্রিমিজমের তৈরি ‘চ্যালেঞ্জিং হেইটফুল এক্সট্রিমিজম’ চৌধুরী মুঈন উদ্দিনেরফৌজদারি অপরাধের বিবরণসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনের পাদটীকায় বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের দণ্ডিত হওয়া এবং একাত্তরে তার যুদ্ধাপরাধের বিবরণ তুলে ধরা হয়। তার নেতৃত্বে বুদ্ধিজীবী হত্যার বর্ণনাও সেখানে যুক্ত করা হয়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল সেই প্রতিবেদন তখনকার টুইটার (বর্তমানে এক্স) হ্যান্ডলে শেয়ার করেন। বিবিসির সাংবাদিক মিশাল হুসেইন, মানবাধিকার কর্মী পিটার ট্যাটচেলসহ অনেকেই তা রিটুইট করেন।
এর প্রতিবাদ জানিয়ে অনলাইন থেকে প্রতিবেদনটি তুলে নেওয়ার দাবি তুলে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মুঈন উদ্দিন। তবে তাতে সাড়া দেয়নি ব্রিটিশ সরকার।
এরপর ২০২০ সালের ১৯ জুন নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি করে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলায় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করেন চৌধুরী মুঈন উদ্দিন। ওই প্রতিবেদন প্রকাশ্যে এনে যুক্তরাজ্যের ডেটা সংরক্ষণ নীতি লঙ্ঘন করা হয়েছে এবং তাতে ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষণ্ণ ও মানহানি হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। সেখানে ৬০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। পরে তা দুই দফায় খারিজ হলেও সুপ্রিম কোর্টে ফের তিনি মামলা করার আবেদন করেন। গত ২০ জুন যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট তাঁর আপিল অ্যালাও করেন।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে ৬০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ চেয়ে চার বছর আগে ওই মামলা দায়ের করেছিলেন তিনি। কিন্তু যুক্তরাজ্যের হাই কোর্ট সেই মামলা বাতিল করে দিয়েছিল। এখন তাঁর আপিল গ্রহণ করে হাই কোর্টের সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট (প্রধান বিচারপতি) লর্ড রিড বৃহস্পতিবার সর্বসম্মত এক রায়ে বলেন, ‘আদালতের কার্যপ্রণালির অপব্যবহারের’ কারণ দেখিয়ে মুঈন উদ্দিনের করা মামলা খারিজ করে নিম্ন আদালতের দেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মুঈন উদ্দিন যে অভিযোগ নিয়ে আদালতে এসেছেন, তার বিচার চলবে।
রায়ের অনুলিপি যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে মামলার পূর্বাপর বর্ণনা রয়েছে।
মামলার বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালে কমিশন ফর কাউন্টারিং এক্সট্রিমিজমের ‘চ্যালেঞ্জিং হেইটফুল এক্সট্রিমিজম’বিষয়ক ব্রিটিশ হোম অফিসের রিপোর্টে চৌধুরী মুঈন উদ্দিনকে এক্সটিমিজমের সাথে জড়িত বলে অভিযুক্ত করা হয়। এতে ১৯৭১ সালে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আইসিটি মামলার রায়কে প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এই রিপোর্টের জন্য চৌধুরী মুঈন উদ্দিন ব্রিটিশ হোম সেক্রেটারির বিরুদ্ধে মানহানি মামলায় উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কোন রকম মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে তিনি জড়িত নন। বরং বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে উল্লেখ করা হয়, চৌধুরী মুঈন উদ্দিন ১৯৪৮ সালে পূর্ব বাংলায় জন্মগ্রহণ করেন, যেটি তখন পাকিস্তান রাষ্ট্রের অংশ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ রাষ্ট্র স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৭৩ সাল থেকে চৌধুরী মুঈন উদ্দিন যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন এবং ১৯৮৪ সাল থেকে একজন ব্রিটিশ নাগরিক। এই সময়ে তিনি ব্রিটেনে বেশ কয়েকটি সামাজিক ও দাতব্য সংস্থায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
নাগরিক সমাজে উল্লেখযোগ্য অনেক ভূমিকার মধ্যে তিনি কাউন্সিল অব মস্ক ইউকে অ্যান্ড আয়ারের সেক্রেটারি জেনারেল এবং ব্রিটিশ মিনিস্ট্রি অব হেলথের ‘মুসলিম স্পিরিচুয়াল কেয়ার প্রভিশন ইন দ্য এনএইচএস’ প্রকল্পের ডাইরেক্টর ছিলেন। তিনি যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থা মুসলিম এইডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি মুসলিম, খৃষ্টান, ইহুদি, হিন্দু, বৌদ্ধ-সহ ৯টা ধর্মের সমস্বয়ে গঠিত মাল্টি ফেইথ গ্রুপের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
রায়ে পরিষ্কার ভাবে বলা হয়, চৌধুরী মুঈন উদ্দিন আইসিটি মামলার সময় পর্যন্ত দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে বিলেতে মুক্তভাবে চলাফেরা করেছেন। তার ঠিকানা বাংলাদেশ সরকারের জানা ছিল। এক্ষেত্রে আইসিটি মামলায় তাঁকে পলাতক বা আত্মগোপনে থাকার কথাটা সঠিক নয়।
রায়ে আরো উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪০ বছরেরও বেশি সময় পরে ২০১৩ সালে চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের একটি আদালত ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ (আইসিটি) দ্বারা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আইসিটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে অপরাধ প্রমাণের পরিবর্তে ঘটনার সময়ে যারা শিশু ছিল এমন সাক্ষী, শোনা কথা ও সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করে রায় প্রদান দেয়। ফলে সর্বজনীনভাবে জাতিসংঘ, ইইউ-সহ মানবাধিকার সংস্থা ও আইনী প্রতিষ্ঠান আইসিটিকে ন্যায় বিচারের মান বজায় রাখতে ব্যর্থ হবার জন্য নিন্দা জানায়।
রায়ে বলা হয়, প্রশ্নবিদ্ধ আইনী প্রক্রিয়ার কারণে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের বিরুদ্ধে জারি করা একটি রেড নোটিশ প্রত্যাহার করেছে ইন্টারপোল।
হোম সেক্রেটারি চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের দাবিকে খারিজ করে দেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করে বলেছিলেন, এটি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার মাত্র। দৃঢ়ভাবে বলা হয়েছিল যে চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের মানহানির দাবিটি ব্রিটিশ হাইকোর্টে গ্রহণযোগ্য নয়। এছাড়া বাংলাদেশে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী হিসেবে রায়ের কারণে তাঁর খ্যাতি ইতিমধ্যেই আর নেই।
কিন্তু হোম অফিসের এই দাবি আদালত গ্রহন করেননি। বরং উল্লেখ করেন যে. আইসিটির রায়ের পরেও তিনি ব্রিটেনের বর্তমান রাজা তৎকালীন প্রিন্স চাল্সের সাথে কয়েকবার সাক্ষাৎ করেছেন। তৎকালীন রাণীর গার্ডেন পাটি ও বাকিংহাম প্রাসাদে আমন্ত্রিত হয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট হোম সেক্রেটারির দাখিল করা বক্তব্য দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। প্রধান বিচারপতি লর্ড রিড পর্যবেক্ষণ করে বলেছেন, ‘যে কোন ব্যক্তির জন্য আদালতে প্রবেশের মৌলিক অধিকার তাদের নাগরিক অধিকার হিসেবে নির্ধারিত। সে অধিকার স্বীকৃত হয়েছে বহু শতাব্দী ধরে সাধারণ আইন এবং ম্যাগনা কার্টা থেকে। যা মানবাধিকার আইন ১৯৯৮ পর্যন্ত সংবিধি দ্বারা সুরক্ষিত।
২০২৩ সালের ১-২ নভেম্বর এই মামলার শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতি লর্ড রিড’র নেতৃত্বে গঠিত ব্যাঞ্চে ৫জন লর্র জাস্টিসদের মধ্যে আরো ছিলেন লর্ড সেইল্স, লর্ড হ্যামলেন্ড, লর্ড বারোজ ও লন্ড রিচার্ডস। ২০১৯ সালে মানহানি মামলার শীর্ষ ল’ফার্ম কার্টার-রাকের মাধ্যমে চৌধুরী মুঈন উদ্দিন হোম অফিসের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন। তার আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন সিনিয়র সলিসিটর অ্যাডাম টিউডর এবং কাউন্সেল জ্যাকব ডিন ও লিলি ওয়াকার-পার।
সুপ্রিম কোর্টের সর্বসম্মত ও যুগান্তকারী এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন চৌধুরী মুঈন উদ্দিন।
ব্রিটিশ আদালতের রায়ে ঢাকায় উদ্বেগ
যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের আপিল গ্রহণ করায় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ায়, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সরকার ও সরকার পক্ষের বিভিন্ন সংগঠন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, প্রজন্ম ৭১ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এ বিষয়ে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।
এ রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিন সংগঠনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের জড়িত থাকার প্রামাণিক দলিল থাকা রয়েছে।
“তা সত্ত্বেও তাকে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানি করার জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করার অনুমতি দেওয়ার সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তটি বাংলাদেশে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য ন্যায়বিচারের প্রতি একটি মারাত্মক আঘাত বলে আমরা মনে করি।”
সংগঠন তিনটি বিবৃতিতে বলেছে, “বিশ্বের প্রতিটি দেশের নিজস্ব বিচার ব্যবস্থা আছে, যা স্বাধীন ও সার্বভৌম হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ যেমন যুক্তরাজ্যের আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, তেমনি যুক্তরাজ্যও বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মত নিজস্ব আইনি প্রক্রিয়ায় চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের মামলার রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে।”আমরা ব্রিটিশ সরকারকে সদ্য প্রদত্ত রায়ের প্রভাব পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।”
বিবৃতিতে সরকারের কাছে চৌধুরী মুঈন উদ্দিনসহ সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও রায় কার্যকর করার জন্য আইনি ও কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে গত রোববার (২৩ জুন) রাজধানীর বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের এক কর্মশালার উদ্বোধন শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, চৌধুরী মুঈন উদ্দিনের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের আদালতের রায় ‘পক্ষপাতমূলক’। রায়ে সঠিক তথ্য পুরোপুরি উঠে আসেনি দাবি করে এ রায়কে তিনি ‘পক্ষপাতমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন।