শিরোনাম
বৃহঃ. ডিসে ৪, ২০২৫

অঞ্জনার মৃত্যু নিয়ে ‘রহস্য’

  • জুলাই বিপ্লব নিয়ে হবে ৮ চলচ্চিত্র

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা- গত ৪ জানুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। তার মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। কেউ কেউ ‘রহস্যের’ জাল বুনছেন। অভিযোগের তির নন্দিত এই নায়িকার পালিত পুত্র নিশাত মনির দিকে।

গত ৩ জানুয়ারি রাতে অভিনেত্রী অঞ্জনার নিকটাত্মীয় সালমা হক গণমাধ্যমে বলেন, “হঠাৎ করে দেখি যে আপার অনেক জ্বর আসছে। কাঁপুনি দিয়ে প্রচণ্ড জ্বর। আমি ও আমার ভাই মুগদা হাসপাতালের মেডিসিন ডাক্তার আবু রুহানিকে ফোন দিলাম। তাকে বললাম, অঞ্জনা আপা অসুস্থ, অনেক জ্বর আসছে, বাথরুমও করে দিয়েছে বিছানায়। তিনি বললেন তাড়াতাড়ি হাসপাতালে ভর্তি করো। পরে আপার পালিত ছেলে মনিকে বললাম যে, বাবা তুমি ভর্তি করো। সে বললো না কিছু হবে না, ঠিক হয়ে যাবে। আম্মুর এরকম হয়েছে অনেকবার উত্তরায় থাকতে, ঠিক হয়ে যাবে। আমি চারদিনই এসে আপাকে এমন অবস্থায় পেয়েছি যে বিছানায় বাথরুম করে দিয়েছে। আমি এসে এসে আবার স্যুপ খাইয়ে দিয়ে গেছি। পরে আমি হাত ধরে দেখলাম যে হাত ধরলে নিচে পড়ে যায়। তখন ভাবলাম হয়তো স্ট্রোক করেছে।”

অঞ্জনার গৃহকর্মীদের বরাত দিয়ে সালমা হক বলেন, “বাসার তিনজন কাজের লোক বলল আপা উনি তো চার দিন ধরে বিছানায় বাথরুম করতেছে। তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। ছয়দিন তিনি বিছানায় পড়ে ছিলেন। হয়তো তার ডেঙ্গুও হয়েছিল। আমার মনে হয় ডেঙ্গু থেকে তার সমস্যা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্ট্রোক করেছে।”

অঞ্জনার মেয়ের জামাইয়ের সঙ্গে কথা বলার পর অভিনেত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ তথ্য উল্লেখ করে সালমা হক বলেন, “আসলে আপার সঙ্গে কি হয়েছে তা ঠিক আমি আর বলতে পারছিনা। মনি ছোট মানুষ, তাই হয়তো বোঝেনি। না হলে আগেই হাসপাতালে ভর্তি করা হতো। পরে আমি তার মেয়ের জামাই রিপনকে বললাম। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

শেষ বিদায়ের জন্য অভিনেত্রীকে সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে গোসল করানো হয়। সে সময় তার শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় বলে গণমাধ্যমে উঠে আসে।

গণমাধ্যমে একটি সূত্র বলেছিল, “সকালে গোসল করানোর সময় আমি দেখি তার শরীরে বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন। যেগুলো দেখে আমার কাছে স্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি। শুধু তাই নয় আপা আমাকে মাঝে বলেছিল কে বা কারা যেন তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, যা নিয়ে তিনি বেশ ভয়ে ছিলেন। মাঝে আমাকে একদিন কল দিয়েও বলেছিল দেখা করতে কি যেন বলবে! কিন্তু সেই কথাটি শেষ পর্যন্ত আর শোনা হলো না।”

বিভিন্ন সূত্রে আরো জানা যায়, অঞ্জনার পালিত ছেলে মনি তার মায়ের অসুস্থতার খবর কাউকে জানায়নি। এমনকি কেউ দেখা করতে চাইলে তাও দেয়া হয়নি। এদিকে অঞ্জনা রহমানের চিকিৎসার জন্য টাকা দিতে চেয়েছিলেন নন্দিত নায়ক আলমগীর। সেই টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন অঞ্জনার পালিত ছেলে মনি।

নায়িকা অঞ্জনা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বেশ সুপরিচিত মুখ ছিলেন। নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করা একমাত্র দেশীয় চিত্রনায়িকাও তিনি।

জুলাই বিপ্লব নিয়ে হবে চলচ্চিত্র

জুলাই বিপ্লবের সঠিক তথ্য মানুষকে জানানো এবং ইতিহাস ধরে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণলয়। এজন্য ‘রিমেম্বারিং মুনসুন রেভ্যুলেশন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আট বিভাগে আটটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হবে।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী।

তিনি বলেছেন, “ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে ২০২৪-এ যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে এ দেশে, তা যুগে যুগে মানুষের জন্য শিক্ষণীয়। এ ইতিহাস যাতে মুছে না যায়, সেজন্য চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে তা সংরক্ষণ করা হবে। এ বছরের জুন মাসের মধ্যে এই আট চলচ্চিত্রের কাজ শেষ হবে। জুলাই মাসে ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল করে এগুলো দেখানো হবে। এসব চলচ্চিত্র নির্মাণের খরচ বহন করবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।”

উপদেষ্টা জানান, দুই-তিন মাস ধরে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালকদের ওয়ার্কশপের মধ্যে দিয়ে আট তরুণ চলচ্চিত্র পরিচালককে বাছাই করা হয়েছে। তারা এসব ছবি নির্মাণ করবে।

জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করতে আট বিভাগের চলচ্চিত্রকারদের নিয়ে আটটি মাঝারি দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হবে। এজন্য নির্বাচিত আট পরিচালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস যেন মুছে না যায়, এজন্য কাজ করছে সরকার। আন্দোলনের সময়কার ভিডিও কারো কাছে থাকলে তা সংরক্ষণ করা হবে। ডিজিটাল ওরাল হিস্ট্রি হিসেবে শহীদ পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য নেওয়া হবে। আহতদের বক্তব্য ধারণ করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ ফ্যাসিস্ট হতে না পারে। এর মাধ্যমে ফ্যাসিস্টবিরোধী দেয়াল নির্মাণ করা হবে।”

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *