গুয়াহাটি: প্রবল বৃষ্টিতে ডুবেছে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান। প্রাণ বাঁচাতে তাই জাতীয় সড়কে উঠে আসছে হাতি, গন্ডার- সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা। সারিবদ্ধ ভাবে বন্য প্রাণীদের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছে৷ জলের মধ্যে আটকে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়া হরিণের মতো ছোট প্রাণীগুলিকে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে৷ বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে জাতীয় সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
৯০ শতাংশ ডুবেছে জানা গেলেও, মঙ্গলবার তা সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। কারণ ১৩টি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। ক্রমশ প্রতিকূল বন্যা পরিস্থিতিতে এখনও অবধি ৫১ বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে এবং কমপক্ষে ১০০টি উদ্ধার করা হয়েছে। আশ্রয়ের খোঁজে বহু বাঘ-রাইনো পার্শ্ববর্তী গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।
খারাপ বন্যা পরিস্থিতিতে কাজিরাঙা জঙ্গলের ৯৫ শতাংশ অর্থাৎ ৪৩০ বর্গকিলোমিটার অঞ্চল জলের তলায় চলে গিয়েছে। ন্যাশনাল হাইওয়ে-৩৭-এ বন্ধ করা হয়েছে ট্রাফিক মুভমেন্ট।
শেষ একসপ্তাহ জুড়ে ব্যপক বৃষ্টিতে তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। এখনও অবধি ৩৩টি জেলার মধ্যে ২৭টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ২২ লাখের বেশি মানুষ। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, চলতি বছরে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৫০ পেরিয়েছে। সোমবার আরও ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র-সহ ১৩টি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ৪৮০টি ত্রাণ শিবিরে এখনও অবধি ৬০ হাজার মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা অঞ্চলের মধ্যেই আসে কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্ক। প্রায় ৭৬৩ গ্রাম সম্পূর্ণভাবে প্লাবিত হয়েছে এবং এক লাখ হেক্টর চাষের জমি নষ্ট হয়েছে।
বারপেতা অঞ্চল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানেই ক্ষতিগ্রস্ত ৫ লাখের বেশি মানুষ। ক্রমবর্ধমান জলসীমা ধুয়ে দিয়েছে একাধিক রাস্তা এবং ব্রিজ।
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির দ্রুত মেরামত করা হোক। ত্রাণের কাজে সকল বিধায়ক এবং সাংসদদের কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তবে সবকিছুর পাশাপাশি, বন্যা কবলিত অসমে উপস্থিত থেকে শক্তহাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। অপারেশন চালাচ্ছে তাঁরা।