।। লীনা দিলরুবা ।।
গোলাম মুরশিদের লেখালেখির ধারা বহুধা। বাঙালি সমাজ-সংস্কৃতি, উনিশ শতকের বঙ্গদেশ, বঙ্গীয় রেনেসন্স, মানবীবিদ্যা, মাইকেল এবং নজরুলের জীবনীগ্রন্থ নিয়ে গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশ করে তিনি এখানে লেখালেখির একটি স্বতন্ত্র ধারা প্রতিষ্ঠা করেছেন। নজরুল-জীবনী নিয়ে লেখা তাঁর গবেষণাধর্মী বইটি -‘বিদ্রোহী রণক্লান্ত : নজরুল-জীবনী’ সম্প্রতি আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছে।
নজরুল ইসলাম বাংলা-ভাষাভাষিদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন কবি। নাতিদীর্ঘ লেখালেখির জীবনে তিনি যতো না লেখা নিয়ে আলোচিত ছিলেন, তারচেয়ে বেশি আলোচিত ছিলেন বর্ণাঢ্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে। মুসলমান হয়েও কালী পুজা করা, কালীর মূর্তি ঘরে রাখা, পুত্রের নাম কৃষ্ণ মহম্মদ রাখা এবং সর্বোপরি একজন হিন্দু নারীকে বিয়ে করে তিনি ছিলেন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। জন্ম বাউন্ডুলে এবং বিপ্লবী এই কবি জেল খেটেছেন, অনশন করেছেন, বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছেন। কপর্দকশূন্য নজরুল একসময় গাড়ির মালিকও হয়েছেন। তারপর নজরুলের জীবনে নেমে এসেছিল এক অজানা রোগ। যার কারণে তিনি সম্পূর্ণ নীরব হয়ে যান। জীবনের একটি অংশে টগবগে নজরুল, আরেক অংশে নিথর নজরুল। এই পূর্ণ আর এই শূন্য–এটাই নজরুল ইসলাম। প্রেম এসেছে, নীরবে চলেও গেছে। যথাসম্ভব সব অসম্ভব কাজের তিনি ছিলেন কাজী। ঢাকা-কলকাতা উভয় জায়গায় তাঁর ছিল তুমুল জনপ্রিয়তা। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘বসন্ত গীতিনাট্য’ নজরুলকে উৎসর্গ করেছিলেন। অথচ তখন পর্যন্ত নজরুলের মাত্র একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল।
জেল-অভ্যন্তরে তিনি দীর্ঘ অনশনে গেলে অনশন ভাঙতে রবীন্দ্রনাথ টেলিগ্রাম করেছিলেন। চিত্তরঞ্জন দাশের মতো মানুষেরা নজরুলকে পছন্দ করতেন। মুসলমানেরা তাঁকে নিজেদের সম্পদ মনে করলেও নজরুল ছিলেন অসাম্প্রদায়িক এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। এ বিষয়ে গোলাম মুরশিদ বইটিতে যথার্থ বলেছেন, ‘নজরুলের রচনা এবং তাতে প্রতিফলিত চিন্তাধারা, এমন কি, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনযাত্রা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সবকিছুর উর্ধ্বে তিনি নিজেকে শনাক্ত করেছেন একজন মানুষ হিসেবে, যে-মানুষ সকল দেশের, সকল সমাজের এবং সকল ধর্মীয় সীমানার বাইরে অবস্থিত, কেবল মানুষ। এই কারণে বেশির ভাগ লোক তাঁকে ভুল বুঝেছেন। ‘আমার কৈফিয়ৎ’ কবিতায় তিনি বলেছেন যে, হিন্দুরা তাঁকে বলে ‘পাত-নেড়ে’ আর মুসলমানরা বলে ‘কাফের’। আস্তিকরা তাঁকে ভাবে তিনি নাস্তিক, আর কেউ তাঁকে বিবেচনা করে কনফুশিয়াস-পন্থী ব’লে। স্বরাজ্য দলের লোকেরা ভাবে তিনি স্বরাজ্য দলের বিরোধী, আর যারা স্বরাজী নয়, তারা তাঁকে বলে স্বরাজী। পুরুষরা মনে করে তিনি নারী-ঘেঁষা, নারীরা মনে করে তিনি নারী-বিদ্বেষী।’ গোলাম মুরশিদ বলেন, ‘আপদমস্তক তিনি ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যে বিশ্বাসী। তিনি পুরো কংগ্রেসী নন, পুরো কমিউনিস্ট নন, পুরো স্বরাজী নন–তিনি রাজনীতি-সচেতন একজন মানুষ, যিনি পূর্ণ স্বাধীনতা চান, চান প্রতিটি মানুষ যাতে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে–সেই নূন্যতম অধিকার।’
এতসব কিছুর কারণে সম্ভবত এখনো নজরুলকে নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। নজরুলের জীবনী নিয়ে ইতিপূর্বে অনেক গবেষক এবং চিন্তক তথ্যবহল নানা গ্রন্থ রচনা করার পরও তাঁর একটি সাহিত্যিক জীবনী রচনা করতে গোলাম মুরশিদ কলম ধরেছিলেন এবং প্রচুর শ্রম ব্যয় করেছেন।
গোলাম মুরশিদের গবেষণার ধরন বেশ সমন্বিত এবং গভীর। তথ্য পরিবেশনে তিনি নিষ্ঠাবান। ঘটনার উপর আলো ফেলে তথ্যকে ভেতর থেকে উঠিয়ে আনতে তিনি অতিশয় পারঙ্গম। আর এ কারণেই গবেষক হিশেবে দেশে-বিদেশে নানামহল থেকে তিনি সমীহ আদায় করেছেন।
নজরুলের মতো এক অস্থির-চিত্ত প্রতিভাকে সময়ের থেকে অনেকখানি দূরে দাঁড়িয়ে যতখানি সম্ভব বাস্তবোচিতভাবে তুলে ধরা প্রয়োজন ছিলো, গোলাম মুরশিদ সেটির অনেকটাই করেছেন। কিছু ক্ষেত্রে তাঁর সেই চেষ্টাকে যথেষ্ট মনে না হলেও, নজরুলের লেখালেখি এবং তাঁর জীবনের নানা পর্বের গল্পগুলোতে যেখানে তথ্যের ভ্রান্তি ছিল, গোলাম মুরশিদ সেসব জায়গায় জোর দিয়ে ভ্রান্তি থেকে নজরুলকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেছেন। একটি বিষয় উল্লেখ করতে হবে, গোলাম মুরশিদ বরাবর বাঙালির অতিশোয়াক্তিকে অপছন্দ করেছেন। অতিশোয়াক্তি এবং অতিরঞ্জনের উর্ধ্বে উঠে বাঙালির এই বিশেষ ত্রুটি থেকে নিজেকে সরিয়ে আনতে তিনি সবসময়ই সচেতন থেকেছেন। তবে হয়ত অতিসচেতনতার কারণে কোনও কোনও সঠিক তথ্যকে তিনি অতিরঞ্জন বলে চিহ্নিত করেছেন, আবার সেক্ষেত্রে সঠিক তথ্যকেও ভুল বলে রায় দিয়েছেন।
তবে এটিও ঠিক, বেশির ভাগ সময় নজরুলের জীবনের নানা ঘটনা সম্পর্কে উদাহরণ দিতে গিয়ে নজরুলের কাছের মানুষদের ভাষ্যকে প্রামাণ্য ধরে লেখক উপসংহার টেনেছেন।
কয়েকটি উদাহরণের মাধ্যমে তথ্য পরিবেশনে গোলাম মুরশিদের নিষ্ঠা এবং আন্তরিকতাকে, একই সঙ্গে সঠিক তথ্যকেও অতিরঞ্জন বলে চিহ্নিত করার বিষয়টি পরিষ্কার করছি।
নজরুলের জীবনী লেখকদের অনেকেই কুমিল্লার সৈয়দা খাতুন বা নার্গিসের সঙ্গে নজরুলের বিয়ে নিয়ে যে বিভ্রান্তি রয়েছে তথ্যের সে কুহকে ঘুরপাক খেয়েছেন। নার্গিসের সঙ্গে নজরুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তাঁদের বিয়ে হবার কথা ছিল। আলোচিত সেই বিয়েটি ভেঙে যায়। বিয়ের আসর থেকে নজরুল পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে একটি মত রয়েছে, আরেকটি মত হলো, বিয়ের পর বাসর ঘর থেকে নজরুল পালিয়ে যান। গোলাম মুরশিদ ভ্রান্তি উজিয়ে জানান, বিয়েতে হয়ত কাবিন হয়েছিল কিন্তু কাবিন যে হয়েছিল সেটি নজরুল হয়তো লক্ষ্য করেন নি, তিনি মূলত ঘরজামাই থাকার শর্তের উপর বিরক্ত হয়েই বিবাহমঞ্চ ত্যাগ করেন। গোলাম মুরশিদ লেখেন, সেই বিবাহে কোনো বাসর হয়নি, বিয়ের আসর থেকেই নজরুল চলে গিয়েছেন। এই তথ্যগুলো বেশ কৌতূহলোদ্দীপক। একই সঙ্গে এটি ভ্রান্তি মেটানোরও কাজ করেছে।
নজরুলের সঙ্গে নার্গিস ছাড়াও আরও কয়েকজন নারীর প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। সেগুলোর কোনওটি হয়ত একপাক্ষিকও ছিল। যেমন ফজিলাতুন্নেসা। একবার নজরুল ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজে’র দ্বিতীয় বার্ষিক সম্মেলনে যোগদান করার নিমন্ত্রণ পান। সম্মেলনে বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে সবচেয়ে শিক্ষিতা নারী ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এই সম্মেলনে ফজিলাতুন্নেসা ‘নারী-জীবনে আধুনিক শিক্ষার আস্বাদ’ নামে একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন। তাঁর বক্তব্য শুনে নজরুল মুগ্ধ হন এবং তাঁর প্রেমে পড়ে যান। এ প্রেমটি ছিল প্রমীলা দেবীকে বিবাহ করার পর তাঁর বিবাহত্তোর প্রথম প্রেমে পড়া। ফজিলাতুন্নেসা হয়তো একটু প্রশ্রয় দিয়ে থাকবেন কিন্তু নজরুল বিষয়টি থেকে বের হতে পারেন নি। তিনি দূত হিসেবে বারবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। যাই হোক, প্রেমটি একপাক্ষিক হবার কারণে এর আর ডালপালা গজায়নি। ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে কোনও এক রাতে গলার হারের স্মৃতি নিয়ে নজরুল লিখেছিলেন–
নাই বা পেলাম আমার গলায় তোমার গলার হার,
তোমায় আমি করব সৃজন, এ মোর অহংকার।…
নাই বা দিলে ধরা আমার ধরার আঙ্গিনায়
তোমায় জিনে গেলাম সুরের সয়ম্বর সভায়।
পরে তিনি তাঁর ‘সঞ্চিতা’ কাব্যগ্রন্থটি ফজিলাতুন্নেসাকে উৎসর্গ করার অনুমতি প্রার্থনা করেছিলেন, যদিও ফজিলাতুন্নেসা সেই আগ্রহে জল ঢেলে নিজের আপত্তি দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দেন।
আরও চারজন নারীর সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের কথা শোনা যায়, যার সবই হয়ত একপাক্ষিক ছিল। এসব প্রেমকে অবশ্য প্রেরণা হিসেবে চিহ্নিত করাই যৌক্তিক হবে। এরা হলেন উমা মৈত্র, রাণু সোম, শামসুন্নাহার এবং জাহানারা বেগম। রাণু সোম পরে প্রতিভা বসু নাম ধারণ করেন, গাঁটছড়া বাঁধেন বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে। গোলাম মুরশিদ বইতে রাণু সোমের জন্ম তারিখ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, ‘বলা হয় তাঁর জন্ম ১৯১৫ সালে। কিন্তু সেটা সঠিক নয় বলেই ধারণা করি। আমার ধারণার কারণ, ১৯২৬ সালের শেষ দিকে তাঁর গাওয়া দুটি গানের রেকর্ড প্রকাশ করে হিজ মাস্টার্স ভয়েস। এগারো বছর বয়সেও রেকর্ডে গান গাওয়া সম্ভব। কিন্তু সেটা শিশুকণ্ঠে গাওয়া হবে এবং তাকে পাকা গলা বলা যাবে না। ১৯২৯ সালে তোলা কবির সঙ্গে রাণুর ছবি থেকেও তাঁকে আদৌ চোদ্দো বছরের কিশোরী বলে মনে হয় না।’
প্রতিভা বসুর আত্মজীবনী ‘জীবনের জলছবি’তে তাঁর জন্ম সাল ১৯১৫ লেখা আছে। এছাড়া প্রতিভা বসুকে অত্যন্ত কাছ থেকে দেখেছেন বুদ্ধদেব বসুর ছাত্র সমীর সেনগুপ্ত। তাঁর লেখা ‘অমল আমার সময়?’ বইতে ‘প্রতিভা বসু’ নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘শ্রীচরণেষু প্র.ব (প্রতিভা বসু), আপনাকে প্রথম দেখি ১৯৫৮ সালে; আমার বয়স আঠারো, আপনার তেতাল্লিশ। আপনি আমার মায়ের চেয়ে বছর পাঁচেকের ছোটো–মায়ের জন্ম ১৯১০, আপনার ১৯১৫।’
হিজ মাস্টার্স ভয়েসে প্রতিভার গানের বিষয়ে তখন তাঁর বয়স হয়তো আরও বেশি মনে করে গোলাম মুরশিদ যে আভাস দিলেন সেটির পরিপ্রেক্ষিতে আরেকটি প্রবন্ধের কথা স্মরণ করি। প্রতিভা বসুর জ্যেষ্ঠ কন্যা মীনাক্ষী বসু ‘আমার মা প্রতিভা বসু’ লেখার এক জায়গায় লিখেছেন, ‘তাঁর নাম যিনি প্রতিভা রেখেছিলেন, তাঁর দূরদৃষ্টি ছিল মানতেই হবে। সত্যিই তিনি প্রতিভাময়ী, তাঁর প্রতিভা নানাদিকে ছড়ানো। প্রথম জীবনে গানের কথা (১২ বছর বয়সে প্রথম রেকর্ড, নজরুলগীতি, হিজ মাস্টার্স ভয়েসের সঙ্গে চুক্তি), পরবর্তী জীবনে সাহিত্যের কথা সবাই জানেন।’ তার মানে ১২ বছর বয়সে হিজ মাস্টার্স ভয়েসে গান রেকর্ড করার বিষয়টি ভ্রান্ত বা অতিরঞ্জিত নয়। বইয়ের এইসব ছোটোখাটো ত্রুটি আছে, এর সঙ্গে আরেকটির বিষয়ের কথাও উল্লেখ করা প্রয়োজন। সাহিত্য-সমালোচনা বিষয়ক পত্রিকা ‘শনিবারের চিঠি’তে কবি-সাহিত্যিকদের রচনার বেশ তীর্যক সমালোচনা করা হতো, এটা সঠিক। কিন্তু গোলাম মুরশিদ লেখেন, ‘জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হলে লোকে নাকি সবকিছু হলুদ দেখতে আরম্ভ করে। পাঞ্চ পত্রিকা সবকিছুর কেবল লঘুতর দিকটা দেখতে অভ্যস্ত ছিলো। এ পত্রিকায় প্রকাশিত বিকৃত ছবিগুলো থেকে ‘কার্টুন’ কথাটার প্রচলন হয়। পাঞ্চের মতো ‘শনিবারের চিঠি’ পত্রিকা প্রতিষ্ঠার পেছনেও উদ্দেশ্য ছিলো গুরুতর জিনিসকে লঘু দৃষ্টিতে দেখা। ফলে অনেকে এবং অনেক কিছুই এ পত্রিকার তির্যক দৃষ্টিতে বিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু নজরুলের মতো আক্রান্ত হননি অন্য কেউ।’
উল্লেখ করার বিষয় যে, সজনীকান্তের ‘শনিবারের চিঠি’র আক্রমণের মূল কেন্দ্র ছিলেন জীবনানন্দ দাশ, নজরুল নন। এই পত্রিকাটি জীবনানন্দের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল, এদের উপর বিরক্ত হয়ে জীবনানন্দ ‘সমারুঢ়’ কবিতাটি লেখেন।
গোলাম মুরশিদ তথ্য পরিবেশনে কখনো কখনো একরৈখিক দিক অবলম্বন করার কারণে তিনি যে তথ্যের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ভাণ্ডার হয়ে উঠেছিলেন, সেখানে যেন কিছুটা বিভ্রম তৈরি হলো। যদিও এ বিষয়টিকেও আমরা খুব গুরুত্ব দিচ্ছি না। নজরুলের মতো বর্ণাঢ্য একটি চরিত্রের জীবনী লিখতে তিনি যে পরিমাণ তথ্য সংযোজন করেছেন, সেখানে এমন দু’একটি ত্রুটি রয়ে যাওয়া বিচিত্র নয়।
বাংলা সাহিত্যে নজরুলের আগমণকে প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী সীজারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। সীজারের মতো তিনি যেন এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। প্রকৃত প্রস্তাবে নজরুল সম্পর্কে এটাই এক বাক্যের সবচেয়ে সরল সত্য। লেখক এবং গবেষক গোলাম মুরশিদ চির অশান্ত, চির উদ্দাম নজরুল ইসলামের সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য যেমন বিশ্লেষণ করেছেন, যুগপৎভাবে নানা বিভ্রান্তির জাল থেকেও নজরুলের জীবনের নানান কাহিনীকে উদ্ধার করেছেন।
‘বিদ্রোহী রণক্লান্ত : নজরুল জীবনী’ পুরস্কৃত হয়ে তার সঠিক মূল্যটি পেয়েছে। পুরস্কার লাভের জন্য গোলাম মুরশিদকে এই শুভক্ষণে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।