যে দলের বিরুদ্ধে গান গেয়ে, নাটক করে, স্লোগান দিয়ে মঞ্চ কাঁপিয়েছিল অসমের শিল্পী সমাজ, একে একে সেই দলেই গিয়ে নাম লেখাচ্ছেন তাঁরা!
অসমের শিল্পীদের মত ও পথের এমন নির্লজ্জ বদল দেখে অবাক অসমবাসী। যাঁরা দিনের পর দিন শিল্পী সমাজের ডাকে কখনও লতাশিল, কখনও চাঁদমারির মাঠে ভিড় করেছেন। করেছেন আন্দোলন। ভেবেছেন, শিল্পীরা তাঁদের পথ দেখাবেন, অসম বিদেশিশূন্য করবেন, নাগরিকত্ব আইন বাতিল হবে।
ডিসেম্বর থেকে অগস্ট মাসের মধ্যে অনেক জল বয়ে গিয়েছে মহাবাহুর বুক দিয়ে। শিল্পে যেমন সকলই অনিত্য, শিল্পীমনও তেমনই।
তাই আট মাসে বদলে গিয়েছে আন্দোলনের অভিমুখ। প্রথমে ক্যাব, তারপর কা বিরোধী যে আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছিল রাজ্য। প্রাণ গিয়েছিল অনেকের-সেই আন্দোলন করোনার ধাক্কায় এখন বিস্মৃতপ্রায়।
মানুষ বিদেশি খেদানো অপেক্ষা প্রাণ বাঁচাতে বেশি ব্যস্ত। তার মধ্যেই আসু ও কৃষকমুক্তি সংগ্রাম সমিতি আনলক ৩ পর্বে ফের অল্পবিস্তর আন্দোলন শুরু করছে। কিন্তু তখনই পরপর ধাক্কা বিশ্বাসযোগ্যতায়। সৌজন্যে গতবারের মঞ্চসফল শিল্পী সমাজ।
সিএএ বিরোধী আন্দোলনের সময় শিল্পী সমাজ আন্দোলনের প্রধান দুই মুখ ছিলেন জুবিন গর্গ ও অভিনেত্রী বর্ষারানি বিষয়া। বিজেপি দল ছেড়ে ও জ্যোতি চিত্রবনের অধ্যক্ষ পদ ছেড়ে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন অভিনেতা যতীন বরা। বিজেপি ছেড়ে আসেন নায়ক রবি শর্মা।
বিজেপির হয়ে গত বার বিধানসভা নির্বাচনে থিম সং গেয়েছিলেন জুবিন গর্গ। লোকসভা ভোটে থিম সং গান সীমান্ত শেখর। দুজনই কা বিরোধী আন্দোলনে সামিল হলেও সম্প্রতি জুবিন রাজ্য কৃষি দফতরের ব্র্যান্ড অ্যাম্ব্যাস্যাডর হন। এর পর যুব কংগ্রেসের এক নেতা ও তার বন্ধুরা জুবিনকে রাস্তায় গালাগালিও করেন।
আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সিএএ আন্দোলনের চাঁদের হাটের অংশ থাকা শিল্পী সীমান্ত শেখর, প্রাঞ্জনা দত্ত, পংকজ ইংতি, ড্রিমলি গগৈ, বিকি শর্মা, প্রাণজিত্ দাস, রেবা ফুকন, বিরিণা পাঠক, জয় চক্রবর্তী, পল ফুকন, পল্লব পবন বরা, সুদীপ্ত ভরদ্বাজ, জয়শ্রী গোস্বামী, ঋষভ শর্মা, প্রিয়ংকা কলিতা, অঙ্কুরানি শর্মা-সহ প্রায় ৩০ জন অভিনেতা, গায়ক, পরিচালক, নৃত্য পরিচালক, কলা-কুশলী বিজেপিতে যোগ দিলেন। বিজেপিতে এলেন প্রখ্যাত বাঁশি বাদক দিলীপ শর্মাও।
অন্য দিকে গায়ক বাবু বরুয়া, নেকিব, সঙ্গীত পরিচালক অজয় ফুকন-সহ ২৭ জন শিল্পী আজ কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।