আসাম নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপূজার রেশ যেতে না জেতেই আবার এক উৎসবের হাতছানি। দীপমালায় আলোর সাজে সেজে উঠবে শহর থেকে গ্রাম । আলোর উৎসবে মাতোয়ারা হবে বাঙালি । শুধু তাই নয় এর জন্য প্রস্তুতি তুঙ্গে । কয়েক দিনের বিরতির পর ফের কর্মব্যস্ততা দেখা গেছে কুমোরটুলিগুলিতে। করিমগঞ্জে প্রায় প্রতিটি ক্লাবেরই বড় বাজেট, আর এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রয়েছে প্রতিমা। এদিকে আবার হাতে মাত্র আর কটা দিন । তাই কাজকর্ম চলছে জোরকদমে। প্রতিমা কারখানা গুলোতে দিনরাত এক করে প্রতিমা গড়ছেন শিল্পীরা । এর সঙ্গে শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় গড়ে উঠছে শত শত হাজার হাজার মাটির প্রদীপ।
করিমগঞ্জে এবার প্রত্যেকটি ক্লাব বিগ বাজেটের পুজো করছে। শ্যামা মায়ের আরাধনায় ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি তুঙ্গে ।সীমান্ত শহরের কালীপুজোর গুলোর মধ্যে অন্যতম হল স্টেশন রোড-ইএন্ডডি কলোনি ও রায়নগর সর্বজনীন কালীপুজো। সপ্তর্ষি ক্লাবের পরিচালনায় প্রতিবছরেই থিমের চমক থাকে এই কালীপুজোয়। এ বছরও তার অন্যথা হচ্ছে না । ইতিমধ্যে খুঁটি পুজো সম্পন্ন হয়েছে।
বাঁশের কাঠামো বাঁধা হয়ে গেছে । এবারে পুজোর থিম আফ্রিকা মহাদেশের নাইজেরিয়ার বিখ্যাত আদিবাসী উৎসব । উৎসবের প্রতীকী নানা চিত্র ফুটিয়ে তুলতে এখন তৎপরতা তুঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের দীপালি ডেকোরেটার্স এর স্বত্বাধিকারী সঞ্জয় দেবনাথ এবং তার সহ- শিল্পীরা দূর দেশের পার্বণ তুলে ধরবেন মণ্ডপে। মণ্ডপের ভিতর-বাইরের অংশে থাকবে একাধিক মুখোশ ও মূর্তি। তাতে থাকবে নাইজেরিয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের ছাপ।
করিমগঞ্জের মানুষের বিদেশি সংস্কৃতি বা ভিন দেশের উৎসবের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ কখনও না মিললেও মণ্ডপে ঢুকলে মনে হবে একখণ্ড নাইজেরিয়া যেন উঠে এসেছে সপ্তর্ষি ক্লাবের মন্ডপে। প্লাই, বাঁশ, ফোম, থার্মোকল, বিভিন্ন গাছের ডাল, পাটকাটি সহ উপকরণ দিয়েই সেজে উঠবে ৬৫ ফুট উচ্চতার মণ্ডপ। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ১২ ফুটের প্রতিমা গড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্থানীয় রূপ শিল্পালয়কে। রয়েছে চন্দননগরের বাহারি আলো। থিমে প্রত্যেক চরিত্রের প্রয়োজন অনুযায়ী আলো ব্যবহার করা হবে। চোখধাঁধানো আলো ও ইলেকট্রনিক্স বাজির কারিকুরি। যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করবে । আলোর মাধ্যমে সম্পূর্ণ মণ্ডপ, পাশ্ববর্তী এলাকা সহ রাজপথ সাজিয়ে তোলা হবে।
প্রতিবারের মতো এবারের পুজোর সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল। কার্যকরী সভাপতি যথাক্রমে অশোক দেব, সিদ্ধার্থ শেখর দত্ত, কেশব দাস ও সঞ্জয় নাহাটা, সম্পাদক সুমন ধর ও জয় গোপাল দত্ত, কার্যকরী সম্পাদক যথাক্রমে বিমল দাস, কিশোর দাস, শুভজিৎ বণিক, অভিজিৎ পাল, কোষাধ্যক্ষ দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য ও জয়ন্ত দেব, পূজা আয়োজন কমিটিতে রয়েছেন ওয়ার্ড কমিশনার নির্মল বণিক, সিদ্ধার্থ দাস, পিকলু পাল সহ অনেকে।
উদ্যোক্তারা জানান, এবারে ২১ তম বর্ষে পা দিয়েছে সপ্তর্ষি ক্লাবের পরিচালনায় স্টেশন রোড-ইএন্ডডি কলোনি ও রায়নগর সর্বজনীন কালীপুজো। বাজেট নেওয়া হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। তারা বলেন, প্রতি বছরই এখানে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। শহর সহ বরাক উপত্যকার তিন জেলা থেকে অগনিত দর্শনার্থী প্রতিবছর এই পুজো দেখতে আসেন। আলোর রোশনাই প্রতিবারই দর্শকদের মন মুগ্ধ করে থাকে। এবারে বিদেশি সংস্কৃতি তাই আর উপচে পড়া ভিড় থাকবে । আশা করা যায় এ বছরও দর্শনার্থীদের মন ভরিয়ে দেবে সপ্তর্ষি ক্লাবের পরিচালনায় স্টেশন রোড-ইএন্ডডি কলোনি ও রায়নগর সর্বজনীন কালীপুজো।