হাবিবুর রহমান: পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন বেশ ব্যয় এবং সময়সাপেক্ষ। অথচ বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে পণ্য পরিবহন ও যাতায়াত স্বল্পসময় ও অর্থের সাশ্রয়ী হবে।
তবে বর্তমানে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় পণ্য পরিবহনে যে নিয়মিত পথগুলো রয়েছে, তা সব শিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে ভারত থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রবেশ করে। এ কারণে এ পথ দিয়ে পণ্য পরিবহনের পরিমাণ সীমিত।
সেই প্রেক্ষাপটে বেশি বেশি পণ্য পরিবহন ও বাংলাদেশ, ভারত, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মেঘালয়ে যাতায়াতের রাস্তা চেয়েছে ভারত।
বুধবার বিকেলে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্য ভারত সফর-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশের বিদায়ী ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের গত ৬ সেপ্টেম্বর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ভারত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হিলি থেকে মেঘালয়ের মেহেন্দ্রাগঞ্জ পর্যন্ত মহাসড়ক প্রকল্প প্রস্তাব করেছে।
এ নিয়ে একটি প্রকল্পের বিস্তারিত প্রস্তাবও বাংলাদেশকে দিয়েছে নয়াদিল্লি। উপাঞ্চলিক যোগাযোগের সহযোগিতার দৃষ্টিকোণে এ প্রস্তাব করা হয়েছে।
ভারতের এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ড মহাসড়ক প্রকল্পে অংশীদার হওয়ার বিষয়টি আবারও ভারতের কাছে তুলে ধরে বাংলাদেশ।
প্রস্তাবের বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, এর মাধ্যমে ভারত হয়ে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এবং বাইরেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এ প্রকল্পে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সড়কের সংখ্যা সীমিত।
বর্তমান যে সড়কগুলো ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যায়, যা সব শিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে যায়। ফলে ভারত যে পণ্য পরিবহন করে এ পথ দিয়ে, তা সীমিত। তাই বিকল্প পথগুলো খোঁজার তাগিদ দেওয়া হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। কেননা যার মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভারত,উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যাবে।
বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে আমরা খুব বেশি পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ দেখতে পাই না। বেশিরভাগ সংযোগই উত্তর-দক্ষিণ।
ফলে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কৃষি উৎপাদন কেন্দ্র এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাজারের সঙ্গে সংযোগ করবে হিলি থেকে মেহেন্দ্রাগঞ্জ পর্যন্ত মহাসড়ক প্রকল্প প্রস্তাব। এটি এখন সম্ভাব্যতা যাচাই পর্যায়ে রয়েছে।
কারণ এটি খুবই ব্যয়বহুল প্রকল্প হতে যাচ্ছে। এ প্রকল্পে যমুনা নদীর ওপর একটি ১৩ কিলোমিটারের লম্বা সেতু নির্মাণ করতে হবে। দুই প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, কুশিয়ারা নদীর জল বণ্টন একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল।
আমাদের নেতারা এ বিষয়ে একমত হতে পেরেছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রারম্ভিক বক্তব্যে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরটি খুবই সফল হয়েছে। করোনার কারণে গত তিন বছর দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের সফর কিছুটা ধীরগতি পেয়েছিল। তবে সহযোগিতা আগের মতোই শক্তিশালী ছিল।