ত্রিপুরা নিউজ ডেস্ক: প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হল ডিজিটাল বাংলাদেশ আইটি বিজনেস সামিট-২০২২। আগরতলা আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি(আই সি টি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, ত্রিপুরা সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, জেল, অগ্নি নির্বাপণ দপ্তরের রাম প্রসাদ পাল, আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ, ত্রিপুরা সরকারের শিল্প বাণিজ্য দপ্তরের প্রধান সচিব পুনীত আগরওয়াল, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিয়কর্ণ কুমার ঘোষ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন উন্নয়নের প্রধান শর্ত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ। একটি দেশের সড়ক, রেল, বিমান, জলপথের উন্নয়নের পাশাপাশি তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়নে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রধান মাধ্যম। তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের পর থেকে রাজ্যে ডিজিটাল ব্যবস্থা সম্প্রসারণের ফলে রাজ্যে দ্রুততর ও স্বচ্ছ প্রশাসনিক ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। যা দেশ এবং রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সদর্থক ভূমিকা পালন করছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে সবসময়ই আন্তরিক। তাই তিনি ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সার্কভুক্ত সকল দেশগুলিকে আমন্ত্রণ করেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা পরবর্তী সময়েও ভারত এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল ছিল। এ বছরের বাজেটে ভারতবর্ষের জিডিপি ৯ শতাংশ হবে বলে আশাপ্রকাশ করা হয়েছে। ভারত এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি গ্রামভিত্তিক। তাই এই কঠিন সময়েও উভয় দেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে রাজ্যে কিছু ছোট ছোট কোম্পানী আইটি সেক্টারে কাজ করছে। রাজ্যে আইটি সেক্টারের অনুকুল পরিবেশ রয়েছে। তাই তিনি সামিটে উপস্থিত সকল ব্যবসায়ীদের রাজ্যে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
রাজ্যে রেল, বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের একটি বিস্তৃত ধারণা তিনি সামিটে সকলের সামনে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, করোনাকালীন সময়ে ভারতবর্ষ থেকে ১০০টি অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স, ভ্যাকসিন, অক্সিজেন পাওয়া গিয়েছিল। এজন্য তিনি ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সাল নাগাদ দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য কাজ করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কারিগরি জ্ঞানকে সার্বজনীন করার ডাককে সামনে রেখে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার দিকে এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, ভারত সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশের ১২টি স্থানে আইটি পার্ক স্থাপন করা হবে। দেশে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত তথ্য ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত অপটিকেল ফাইবার বসানো হয়েছে।
দেশে বর্তমানে ১৩ কোটি লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। অনুষ্ঠানে সমবায় মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল বলেন, রাজ্য সরকার নতুন ও ডিজিটাল ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতবর্ষ আইটি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে চলছে। তিনি ভারত বাংলাদেশে যৌথ সম্পর্ক আগামী দিনে আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরের প্রধান সচিব পুনিত আগরওয়াল, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি এমডি বিকর্ণ কুমার ঘোষ ও ত্রিপুরাস্থিত বাংলাদেশের সহাকরি হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ। ডিজিটাল বাংলাদেশ আইটি বিজনেস সামিটে দিল্লী, কোলকাতা সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য ও বাংলাদেশের তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবসার সাথে যুক্ত ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন। সামিটে উভয় দেশ এবং ত্রিপুরা রাজ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যবসা করার বিষয়ে কয়েকটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।