ত্রিপুরা নিউজ ডেস্ক: অবশেষে যুদ্ধ বিদ্ধস্ত ইউক্রেন থেকে নিজ বাড়িতে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন ত্রিপুরার তিন ছাত্রছাত্রী। বৃহস্পতিবার তাঁরা রাজ্যে এসে পৌঁছান। জেসমিন দেববর্মা, তাঁর বাড়ি আগরতলার অভয় নগর এলাকায়, মেঘা ত্রিবেদী বিলোনীয়া রামঠাকুর পাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং উপাসনা বিশ্বাস, তাঁর বাড়ি বিলোনিয়া এলাকায়। তাঁরা তিন জনেই মেডিকেল পড়ুয়া।
এর মধ্যে জেসমিন দেববর্মা এবং মেঘা ত্রিবেদী বিমানে আগরতলা ফিরে ও সন্ধ্যায় তাঁরা মহাকরণে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এদিন তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউক্রেনে থাকা ভয়ঙ্কর দিন গুলির কথা বর্ণনা করতে গিয়ে জানান – যুদ্ধ শুরু হবে শোনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা সকলে নিজেদের সাধ্যমত রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করতে থাকেন। ইউক্রেন প্রশাসনিক তরফে তাদের
বাংকারে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়। সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা বাংকারে প্রবেশ করতেন। পরবর্তী সময় সুযোগ বুঝে তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে ইউক্রেন থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রওনা দিয়ে বৃহস্পতিবার আগরতলা এসে পৌঁছান। ইউক্রেনে প্রচণ্ড খারাপ অবস্থার মধ্যে তাঁরা ছিলেন, খাবার, পানীয় জলসহ অন্যান্য সামগ্রীর তীব্র সমস্যা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে ইউক্রেন সীমান্তে।
মাত্র একটি গেট দিয়ে নারী-শিশু অন্যান্য নাগরিক সহ যানবাহনকে বের হতে দিচ্ছে। এর ফলে প্রচণ্ড ভিড় সৃষ্টি হয়েছে সীমান্তে। তাঁদের একজন রোমানিয়া সীমান্ত দিয়ে এবং অন্যজন যুগোস্লাভিয়ার সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছেন। তবে ইউক্রেন সীমান্ত পেরোনোর পর তাঁদের কোনো সমস্যা হয়নি। বিভিন্ন এনজিওর তরফে তাঁদের সহায়তা করা হয়েছে। এদের কেউ কেউ ন্যূনতম ১০কিলোমিটার পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার হয়েছেন। এমনকি শিশুদের গান পয়েন্টে রেখে অত্যাচার চালাচ্ছে ইউক্রেন বর্ডার পুলিশ বলেও জানিয়েছেন তারা। কঠিন পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে উদ্ধার করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
ত্রিপুরার যারা এখনো ইউক্রেনে আটকে আছেন তাঁদের উদ্ধারের জন্য ভারত সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। সে দেশে অবস্থানরত ভারতীয় দূতাবাসে সমস্ত তথ্য দিয়ে রাখা হয়েছে। আটক সকল নাগরিককে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।