পলিটিক্যাল নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র দশটা বিভাগীয় সমাবেশের আটটা হয়ে গেছে আর মাত্র দুইটা বাকি আছে। ডেটলাইন ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরে অবৈধ সরকার কাঁপছে এবং পাততাড়ি গোটাচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। এর আগে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা ১০ তারিখে বিএনপিকে হেফাজতের মত দমন করার হুমকি দিলেও আর্মি-পুলিশ বিএনপির সমাবেশে গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফলে অবৈধ সরকারের লোকেদের সুটকেস গোছানোর হিড়িক পড়েছে এবং চলতি মাসে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় টাকার পাচার বেড়েছে।
টাকা পাচার বেড়েছে
দেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আচলের নীচ নিয়ে দেদারছে টাকা পাচার চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় চলতি মাসে চলতি মাসে টাকা পাচার অত্যাধিক বেড়েছে। টাকা পাচারে শেখ হাসিনা পরিবার শীর্ষে অবস্থান করছে। ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা লুট করে আমেরিকা ও সিঙ্গাপুরে পাচার করেছিল শেখ হাসিনার পরিবার। হাসিনার নির্দেশে ও তার ছেলে দুর্নীতির বরপুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনায় এবং তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমানের সহযোগিতায় রিজার্ভ থেকে এই অর্ত তারা সরিয়েছিল। সেই টাকা এখন পর্যন্ত ফিরে আসেনি। কিন্তু এর মধ্যে চলতি মাসে আবারো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২ বিলিয়ন ডলার গায়েব হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ইপিবি’র পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকও রপ্তানি আয়ের হিসাব রাখে। প্রতি অর্থবছরে কত হাজার মিলিয়ন ডলার রপ্তানি থেকে আসে সেটার বিস্তারিত হিসাব রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের হিসাবে দেখা গেছে, ওই বছর রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩৫,৩৪১ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এসে বাংলাদেশ ব্যাংক দেখিয়েছে ৩৩,৩৭৪ মিলিয়ন ডলার। এখানে প্রায় ২ হাজার মিলিয়ন বা ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কম দেখানো হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল এ নিয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে চলতি নভেম্বর মাসের মাত্র দুই সপ্তাহে তিন ইসলামি ধারার ব্যাংক থেকে বেনামে ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা ঋণের নামে পাচার হয়ে গেছে, যেখানে গ্রহীতাদের ঠিকানাই নেই। শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস ছেলে কোম্পানি গঠনের ১৪ দিনের মাথায় ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ পেয়েছে ৯০০ কোটি টাকা। জামানতের প্রয়োজন হয়নি, লাগেনি কোনো ক্রেডিট রিপোর্ট। কোম্পানির ঠিকানায় কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায়নি। নথিপত্রে মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা টেলিফোন নম্বরও নেই। এমন তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ৯০০ করে মোট ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে ইসলামী ব্যাংক থেকে। ছয় বছরে প্রতিবছর গড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হলেও গত এক বছরেই ঋণ দেওয়া হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। এই ঋণের অর্থ সম্পূর্ণ পাচার হয়েছে বলে দেশের অর্থনীতিবিদরা ধারণা করছেন। তারা বলছেন, জয় তখন ঢাকায় ছিলেন। শেখ পরিবার তথা শেখ হাসিনা ও তাঁর দুর্নীতিগ্রস্ত ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ ছাড়া, তাদের সম্মতি ও সুপারিশ ছাড়া এই ধরনের লোন এই সংকটের সময়ে কেউ দিতে সাহস করবেন না। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী আর তার পুত্র ছাড়া, তাদের তদবির বা তাদের হস্তক্ষেপ ছাড়া আইডি চেক না করে ব্যাংক লোন করা সম্ভব না।
সুটকেস গোছানোর হিড়িক
ডিসেম্বরের ১০ তারিখে শেখ হাসিনার অবৈধ দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের পতন হবে এই আশঙ্কায় দুর্নীতিবাজদের সুটকেস গোছানোর হিড়িক পড়েছে। দেশের টাকা লুটপাট করে, ঋণের নামে দেশের সব ব্যাংক ফতুর করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে শেখ পরিবার, আওয়ামী পরিবার ও তাদের ঘনিষ্ঠ লোকেরা দেশ থেকে পাততাড়ি গোটাচ্ছে। অবৈধ সরকারের এমপি, মন্ত্রীসহ আওয়ামী লুটেরাদের কারো ছেলে মেয়ে বিদেশে পড়ছে, কেউ কানাডা, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম বানিয়েছে। সরকারের পতন হলে সাথে কী নিবে না নিবে এই নিয়ে হিসাব নিকাশ চলছে। অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী সবাইকে পাঠিয়ে দিয়ে একা থেকে যাবেন নাকি নিজেও কোন দেশে চলে যাবেন তা নিয়ে ভাবছেন। মাঝপথে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ও নাকি তিনি করছেন। শেখ পরিবারের আশীর্বাদপুষ্ট কিছু ব্যবসায়ী ও জেনারেল তারেক সিদ্দিকীর সহযোগীরা তাকে ভরসা দিচ্ছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি তার বাপের মত সুটকেস গুছিয়ে রেডি করছেন।
গুলি চালাবে না আর্মি-পুলিশ
১০ তারিখ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হওয়ায় বিএনপির সমাবেশে দমন পীড়ন চালাবেনা, গুলি চালাবে না আর্মি-পুলিশ। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে গুলি চালালে সারাবিশ্বে নিন্দার ঝড় উঠবে, দাবানল ছড়িয়ে পড়বে। বিশ্বের প্রতিটা পত্রিকায় নিউজ হবে যে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে বাংলাদেশে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। র্যা ব, পুলিশের উপর এমনিতেই স্যাংশন আছে। গুলি চালালে নতুন করে আরও স্যাংশন আসবে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে লোক নেয়া বন্ধ হয়ে যাবে বলে আর্মি-পুলিশ মনে করছে। যে কারণে বিএনপির সমাবেশে গুলি চালাতে আর্মি-পুলিশ অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
তবে দেশের অভিজ্ঞমহল বলছে, সরকারের সামনে এখনো তিনটা পথ খোলা আছে। এক: বিএনপিকে ঠেকাবে। দুই: আওয়ামী লীগকে গুছিয়ে তার চেয়ে বড় সমাবেশ করবে। তিন: পাততাড়ি গুটিয়ে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রসেসে তারা থাকবে। কোন পথ তারা বেছে নিবে সময়ই বলে দিবে।