ত্রিপুরা নিউজ ডেস্ক: বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ত্রিপুরা রাজ্যে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা ছিল না মানুষদেরকে অভাবের জন্য সন্তানদের বিক্রি করতে হতো না, কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যে অনাহারে মৃত্যু হচ্ছে। মানুষ অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি করছেন। এই অবস্থায় সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। মানুষ সীমান্ত পার করে বাংলাদেশি গিয়ে সেখান থেকে বনজ সম্পদ এনে জীবন যাপনের চেষ্টা করছে কিন্তু তাদের খবর নেওয়ার কেউ নেই। এই অভিযোগ ত্রিপুরা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকারের।
সোমবার বিকেলে আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন মানিক সরকার।তিনি আরো বলেন গত ২১জানুয়ারি ত্রিপুরার পূর্ণ রাজ্য দিবসের অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সেদিন তিনি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ত্রিপুরার রাজন্য শাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে সংযুক্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য ত্রিপুরার রাজাদের প্রশংসা করেছেন কিন্তু বাস্তব হচ্ছে সাধারণ মানুষের চাপে ত্রিপুরা ভারতভুক্ত হয়ে বলে দাবী করেন।
তিনি আরো বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জনগণের ভূমিকাকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। এভাবে যারা ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করবে মানুষ তাদের ভুলে যাবে এবং ইতিহাস স্বমহিমায় চলতে থাকবে। মানিক সরকারবলেন পূর্ণরাজ্য দিবসের অনুষ্ঠানে সেদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন রাজন্য শাসনের পর রাজ্যের কোন উন্নয়ন হয়নি, যা কিছু হয়েছে তা রাজন্য আমলে এবং বর্তমান সরকারের সময়ে।
এই প্রসঙ্গে মানিক সরকারের পাল্টা প্রশ্ন রাজ্যে ১০টি মহকুমা ছিল এখন ২৩টি হয়েছে, রাজ্যে ৩টি জেলা ছিল এখন তা বেড়ে ৮টি হয়েছে, এগুলি কার সময় হয়েছে? মানিক সরকার বলেন ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষের প্রয়োজনে যে সব পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল তার সবকটি কাজ করা হয়েছে এবং কেন্দ্রের অনিচ্ছুক হাত থেকে দাবী করে প্রয়োজনীয় অর্থ আদায় করা হয়েছে।
পূর্ণরাজ্য দিবসের অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ত্রিপুরা সরকারের আগামী ২৫বছরের কর্মপরিকল্পনার রূপরেখা সম্বলিত একটি বই প্রকাশ করেন। এই প্রসঙ্গে মানিক সরকারের বক্তব্য এই সরকার ৫ বছরের জন্য ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের আগে বিজেপি সাধারণ মানুষের সুবিধা সম্বলিত ৩০০টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সরকারের প্রায় ৪বছর হয়ে গিয়েছে এগুলির কতটুকু কাজ হয়েছে এই বিষয় নিয়ে কোন কথা নেই। আবার নতুন করে মানুষদের বিভ্রান্ত করতে এসব বলছেন বলেও অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে মানিক সরকার আরো বলেন তারা যদি মনে করে যে মানুষ এই সব লোভনীয় কথায় আবার ভুলে যাবেন এবং তাদের প্ররোচনার ফাঁদে পা দেবেন তবে ভুল করছেন। ঘরে ঘরে মানুষ প্রস্তুত হচ্ছে এবং এর পাল্টা জবাব দেবেন। এই সরকারের উপর থেকে মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে, এই সরকার জন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ত্রিপুরার মানুষদের বোকা ভাবলে ভুল করছেন।