ত্রিপুরা নিউজ ডেস্ক: ত্রিপুরায় পিটিয়ে হত্যার ৩ দিন পর ডালিম মিয়া নামে এক বাংলাদেশি যুবকের লাশ ফেরত দিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে আখাউড়া-আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্ত পথে ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহিজলা জেলার টাকার জলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমানের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছেন।
এ সময় দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফসহ ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নিহত বাংলাদেশি যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সীমান্তবর্তী মাদলা গ্রামের মোহন মিয়ার ছেলে ডালিম মিয়া (৩০)।
জানা গেছে, জহিরুল ইসলাম নামে একই এলাকার বাসিন্দা গুরুতর আহত অবস্থায় আগরতলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কসবার মাদলা গ্রামের মোহন মিয়ার ছেলে ডালিম মিয়াসহ একই গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে জহিরুল (৩০), সেলিম মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩০) এবং কসবার কোল্লাপাথর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে হৃদয় মিয়াসহ (২৬) কয়েকজন বাংলাদেশি মিলে শুক্রবার রাতে কসবা সীমান্ত পথে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন।
আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে (শূন্যরেখায়) ত্রিপুরার টাকার জলা থানার ওসি দেবানন্দ রিয়াং জানান, ভারতের রাজ্যের সিপাহিজলা জেলার টাকারজলা থানাধীন গোলাঘাটী গ্রামের একটি বিদ্যালয় থেকে শনিবার সকালে এক শিক্ষকের মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। এ সময় সেখানকার ভারতীয় অধিবাসীরা তাদের চোর সন্দেহ করে ধাওয়া করে ডালিমকে ধরে ফেলে এবং ঘটনাস্থলে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় জহিরুল ইসলাম নামে অপর এক বাংলাদেশি যুবক পিটুনিতে গুরুতর আহত হন। অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরে জহিরুলকে জনরোষের কবল থেকে টাকারজলা থানা পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
নিহত ডালিম মিয়ার পিতা মোহন মিয়াসহ স্বজনরা জানান, মাদলা গ্রামের হানিফ মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান শিমুল (৩৫) কয়েক দিন আগে থেকেই ভারতে অবস্থান কর ছিলেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিমুলের ভাই জহিরুলসহ অন্যরা ডালিমকে ভারতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, শিমুলের স্ত্রীর সঙ্গে ডালিমের পরকীয়া চলছিল। পারিবারিকভাবে বিষয়টি সম্প্রতি আপস-মীমাংসা হলেও পরকীয়ার জের ধরেই শিমুল ও তার লোকজন ডালিমকে হত্যা করেছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর চেকপোস্ট বিজিবি ক্যাম্প ইনচার্জ মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ডালিমকে বা কারা, কেন পিটিয়ে হত্যা করেছে, তা জানাতে পারেনি বিএসএফ।
আখাউড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, যেহেতু হত্যাকাণ্ড ভারতে ঘটেছে সুতরাং ভুক্তভোগী পরিবার এ বিষয়ে বিচার চাইলে ভারতের আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। এ ঘটনায় ত্রিপুরার স্থানীয় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।





