আগরতলা: ত্রিপুরায় পুর ও নগর সংস্থা নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৫ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলাফল ঘোষণা দেবে ২৮ নভেম্বর। সারা ত্রিপুরায় ১টি পুর নিগম, ১৩টি পুর পরিষদ এবং ৬টি নগর পঞ্চায়েতে ৩৩৪টি আসনে ভোট হবে। তাতে, ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৭৭০টি। ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৭৭২ জন ভোটার। ভোট ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই নির্বাচনী এলাকায় আদর্শ আচরণবিধি লাগু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এম এল দে।
আজ সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রী দে বলেন, ২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর ২০টি পুর ও নগর সংস্থার মেয়াদ সমাপ্ত হয়েছে। কিন্ত, করোনার প্রকোপের কারণে নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। ভোট পিছিয়ে দিতে হয়েছে। এখন ত্রিপুরায় করোনার সংক্রমণ অনেকটাই কমেছে এবং নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। তাই, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে কমিশন। তাঁর দাবি, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য দফতরের সাথে আলোচনার মাধ্যমে কমিশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সকলের কোভিড বিধি কঠোরভাবে পালন করতে হবে।
এদিন তিনি বলেন, ত্রিপুরায় পুর ও নগর সংস্থায় সীমানা পূণ: নির্ধারিত হয়েছে। তাতে স্বাভাবিকভাবে আসন সংখ্যা বেড়েছে। তাঁর কথায়, গত নির্বাচনে মোট আসন ছিল ৩১০টি। এখন বেড়ে হয়েছে ৩৩৪টি। স্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ভোটারের সংখ্যাও। তিনি জানান, নির্বাচনে তপশিলি জনজাতি সংরক্ষিত ৮টি, তপশিলি জাতি সংরক্ষিত ৮৫টি এবং সাধারণ শ্রেণীভুক্ত ২৪১টি আসন রয়েছে। মোট আসনের ৫০ শতাংশ ১৫৭টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে।
তিনি জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।২০২১ সালের ১ জানুয়ারী ভিত্তি বছর ধরে ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে, মোট ভোটার রয়েছেন ৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৭৭২ জন। তিনি বলেন, পুরুষ ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ৯৭৯ জন, মহিলা ৩ লক্ষ ৭৭৭ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১৬ জন।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, ধর্মনগর, পানিসাগর, কৈলাসহর, কুমারঘাট, আমবাসা, কমলপুর, খোয়াই, তেলিয়ামুড়া, মোহনপুর, জিরানিয়া, বিশালগড়, সোনামুড়া, উদয়পুর, অমরপুর, বিলোনিয়া, শান্তিরবাজার এবং সাব্রুম মহকুমা শাসক এবং পুর নিগম এলাকায় সদরের মহকুমা শাসক, অতিরিক্ত মহকুমা শাসক এবং অতিরিক্ত জেলা শাসক রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। তাঁর দাবি, নির্বাচনে ২২ জন অবজারভার এবং ১৫১ জন সেক্টর ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করেছে কমিশন। পুলিশের সেক্টর অফিসার আরক্ষা দফতর নিযুক্ত করবে।
শ্রী দে এদিন বলেন, পুর ও নগর সংস্থা নির্বাচনে ৭৭০টি ভোট গ্রহণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তবে, গণনা শুধুমাত্র মহকুমা মুখ্য কার্যালয়েই সম্পন্ন হবে। নির্বাচনে এভিএম ব্যবহৃত হবে। তার জন্য ইতিমধ্যে এভিএমের মহড়া শুরু হয়ে গেছে।
তাঁর দাবি, নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপুর্ন ভাবে সম্পন্ন করার প্রশ্নে পুলিশের সাথে বৈঠক হয়েছে। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরক্ষা দফতর বন্দোবস্ত করবে। তবে, গণনা কেন্দ্র এবং এভিএমের পাহারায় কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন থাকবে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, নির্বাচনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এদিকে, গণনা কেন্দ্র এবং এভিএমের মহড়ায় ভিডিওগ্রাফি করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
রাজ্য মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এদিন ঘোষণা দেন, ২৭ অক্টোবর পুর ও নগর সংস্থা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। ওইদিন থেকেই মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার অন্তিম তারিখ ৩ নভেম্বর। স্ক্রুটিনি করা হবে ৫ নভেম্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহারের অন্তিম তারিখ ৮ নভেম্বর দুপুর ৩টা পর্যন্ত। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৫ নভেম্বর। তিনি বলেন, সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হবে, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সাথে তিনি যোগ করেন, পুণরায় ভোট গ্রহণের প্রয়োজন হলে ২৭ নভেম্বর সূচী নির্ধারিত হয়েছে। ফলাফল ঘোষণা দেওয়া হবে ২৮ নভেম্বর। তিনি বলেন, সকাল ৮টা থেকে গণনা শুরু হবে। এদিন তিনি জানান, ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সাথে তিনি যোগ করেন, আজ নির্বাচন ঘোষণার সাথে সাথেই নির্বাচনী এলাকায় আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হয়ে গেছে।





