ত্রিপুরা নিউজ ডেস্ক: প্রতি বছরের মতো এবছরও ২১ফেব্রুয়ারী ত্রিপুরা সরকারের শিক্ষা দপ্তর এবং আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সরকারি হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে পালিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই দিবস উদযাপনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। এই বৈঠকের পৌরোহিত্য করেন ত্রিপুরা সরকারের শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারি হাই কমিশনের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদসহ শিক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন আধিকারিক এবং এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন কমিটির কর্মকর্তারা। ত্রিপুরার শিক্ষা মন্ত্রী রতন লাল নাথ এদিনের বৈঠক সম্পর্কে বলেন- এ বছরও যৌথভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হবে। মূলত দুটি পর্বে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হবে। একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে আগরতলার যৌথ উদ্যোগে একটি শোভাযাত্রা আয়োজন করা হবে।
শোভাযাত্রাটি রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করবে। এতে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিবর্গ অংশ নেবেন। শোভাযাত্রা শেষে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে সরকারি হাইকমিশনের উদ্যোগে তৈরি অস্থায়ী ভাষা শহীদ মিনারে সকলে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এখানে শেষ হবে প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান।
কয়েক ঘণ্টার বিরতিতে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানটি হবে রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে, এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, ত্রিপুরা সরকারের শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ, ত্রিপুরা সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, ত্রিপুরা সরকারের জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এই অনুষ্ঠানে অতিথিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভাষা দিবসের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
প্রসঙ্গত, ত্যাগ ছাড়া; আত্মবলিদান ছাড়া স্বাধীনতা আসে না। শহীদের আত্মত্যাগ, রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা ‘বাংলা’। ১৯৫২-এর ভাষা শহীদদের পবিত্র রক্তস্রোতের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের গৌরবগাঁথা। ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলার ছাত্রসমাজ আত্মদান দিয়ে মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। লাল তাজা রক্তে রাঙা অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি রক্তের প্লাবনের মধ্য দিয়ে আজ সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস গৌরবময় আসনে আসীন। শুধু বাঙালি নয়, বিশ্বের প্রতিটি জাতির মাতৃভাষার মর্যাদা, স্বাধিকার, স্বাধীনতা এবং মানুষের মতো বাঁচার দাবির সংগ্রামের দুর্জয় অনুপ্রেরণা সৃষ্টির চির অনির্বাণ শিখার দীপ্তিতে দিগন্ত উদ্ভাসিত করেছে পবিত্র ২১শে ফেব্রুয়ারি। ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ বাঙালিকে শিখিয়েছে আত্মত্যাগের মন্ত্র, বাঙালিকে করেছে মহীয়ান।