শিরোনাম
বৃহঃ. ডিসে ১১, ২০২৫

পতিত আওয়ামীলীগের প্রাসঙ্গিকতা প্রতিষ্টা ও জুলাই বিপ্লব ধ্বংসে জরীপ!

।। সিরাজুল ইসলাম শাহীন ।।

 জরিপ তথ্যের খেলা  শুরু হয়েছে । সম্প্রতি প্রকাশিত নানা ব্যানারের ডাটার মারপ্যাচে আওয়ামী প্রাসঙ্গিকতা প্রতিষ্টার সূক্ষ্ম প্রয়াস স্পষ্ট। একইসাথে জুলাই বিপ্লব ধংসের নীল নকশা প্রতীয়মান হয়। একটু গভীরভাবে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক  জরিপটি দেখতে গেলে বিষয়টা আরো পরিষ্কার হয়ে যায়।  

ভয়েস ফর রিফর্ম -এর সহযোগিতায় সম্পন্ন এই জরিপে ১২তম স্লাইডে মব সহিংসতা, মেয়েদের নিরাপত্তা, রাতে চলাচলে নিরাপত্তা ও পোশাকের জন্য রাস্তা ঘাটে হয়রানি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখানো হয়েছে। অথচ ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের পতনের পর এসব ঘটনা তুলনামূলক বিচারে মোটেই উল্লেখযোগ্য হতে পারে না। মূলত জুলাই বিপ্লব বিতর্কিত করতে অযাচিত স্পর্শকাতর বিষয় বড় করে দেখানো হয়েছে। তথাকথিত নারীবাদী ও ফ্যাসিবাদী ল্যাসপেন্সার গোষ্ঠীর ক্রীড়নক ছাড়া এহেন অপতৎপরতা সম্ভব নয়। এ থেকে জরিপকারীদের থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে।

প্রতিটা পয়েন্টে আওয়ামীলীগের উল্লেখ করে এরা পতিত ফ্যাসিবাদীদের প্রাসঙ্গিকতা প্রমানের দুঃসাহস দেখিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে  কিছু বদ্ব উম্মাদ দলকানা ছাড়া কোন সুস্থ বিবেকবান এদের ভোট দেয়ার চিন্তাও করতে পারে না। কিন্তু জরিপে উল্লেখযোগ্য হার দেখানো নিঃসন্দেহে সুপরিকল্পিত। এমনকি, প্রকাশিত  গোপন ষড়যন্ত্রে উৎসাহ দিয়ে আগুনে ঘৃতাহুতির অংশ হতে পারে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের এত বছর পরেও হিটলারের নাৎসী বাহিনীর আলোচনা খোদ জার্মানীতে এখনও অপ্রাসঙ্গিক। হিটলার কিন্তু অমানবিকতা দেখিয়েছিল নিজ জার্মান জাতিকে পৃথিবীতে শ্রেষ্ট প্রমান করতে। অপরদিকে আওয়ামীলীগ নিজ জাতিকে ধংসে তৎপর ছিল বহিঃশত্রুর প্ররোচনায় এবং শুধুমাত্র লোভের বশবর্তী হয়ে। জুলাই ম্যাসাকার, পিলখানার বিডিআর হত্যাকান্ড, আয়নাঘর নির্যাতন, শাপলা চত্তর গনহত্যা, জাতীয় নেতৃবৃন্দের বিচারিক হত্যার মত ঘটনা সমূহ বর্ণনারও অতীত।  আপন দেশের বিরুদ্বে এমন জঘন্য নৃশংসতা দুনিয়ার ইতিহাসে বিরল। সুতরাং ইনিয়ে বিনিয়ে, ইনক্লুসিভ রাজনীতির নামে অথবা জরিপের নামে আওয়ামী হায়েনাদের প্রাসঙ্গিকতার যে কোন ধরনের আলোচনা পরিত্যাজ্য। এই জরিপটি তাই গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে শতভাগ।

বিএনপি ও জামায়াতকে কম অথচ কিছুটা কাছাকাছি এবং এনসিপিকে অগ্রসরমান দেখিয়ে জুলাই বিপ্লবের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে নোংরা প্রতিযোগিতা আশা করা হচ্ছে। সুইং ভোট পরিকল্পিতভাবে বেশী দেখানো হয়েছে বলে মনে হয়। এ থেকে অপশক্তি ফায়দা তুলতে চায়। অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়েছে বটে। গোটা বিষয়টা খাওয়ানোর হীন উদ্দেশ্যে যে নয়, তা বলা যাবে না। ভুললে চলবে না যে, বিগত ১৮ বছরের ফ্যাসিবাদী অপশাসনের বৈধতার অনুঘটক কিন্তু এ শ্রেণীর সুশীলরাই। 

জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে এমন গরম হাওয়া আরো বইবে তা নিঃসন্দেহে বলা  যায়। অতএব  তথপ্রবাহের ডিজিটাল এই যুগে দক্ষতার সাথে সত্য দিয়ে এসব মোকাবেলার পর্যাপ্ত প্রস্তুতি প্রয়োজন। সাধারণ জনগনের কাছে বেশী করে যেতে হবে। পারস্পরিক কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি নয় বরং ইতিবাচক গঠনমূলক রাজনীতি দেখাতে হবে। গনমানুষের আকাঙ্খা ও মনোভাব অনুধাবন করতে হবে। কার্যকর রাজনৈতিক দল ও  নেতৃত্বের নিজেদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে সর্বাগ্রে। একই সাথে যথাযথ চিত্র অনুধাবনে  প্রকৃত ডাটা সংগ্রহের নিজস্ব সক্ষমতা অর্জন করা জরুরী।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *