লণ্ডন, ২৮ মার্চ: গত ২৭ মার্চ, বুধবার, বিলেতের অন্যতম প্রধান কাগজ ‘সাপ্তাহিক সুরমা’ কার্যালয়ে এক ইফতারোত্তর আলোচনা সভায় বেথনালগ্রীন ও স্টেপনী আসনে লিবারেল ডেমোক্র্যাট (লিবডেম) পার্টির এমপি প্রার্থী ও টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর রাবিনা খান বলেছেন, আমি ফিলিস্তিনে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের দখলদারিত্ব ও গাজায় সহিংসতার অবসান চাই। আমি গাজায় যুদ্ধ বিরতির জন্য বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনির জনগণের আহ্বানের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য বিশ্বমঞ্চে আমাদের কণ্ঠস্বরকে প্রসারিত করতে চাই।
রাবিনা খান বলেন, ফিলিস্তিন ও গাজাতে যে আগ্রাসন চালানো হচ্ছে, সাধারণ নিরপরাধ জনগণকে যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে। এতে পার্লামেন্টে বর্তমান এমপি ও তাঁর দল লেবার পার্টির ভূমিকা কি? আমার দল লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টির সকল এমপিরা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। জাতিগত সমতার জন্য লিবারেল ডেমোক্র্যাটস ক্যাম্পেইনের একজন সদস্য হিসাবে আমি গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য ভোট দেওয়াসহ বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে লিবারেল ডেমোক্র্যাট এমপিদের সাথে কাজ করেছি। লিবডেম এমপিরা একটি দ্বিপাক্ষিক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব এবং সমস্ত জিম্মিদের অবিলম্বে মুক্তির জন্য প্রস্তাব করেছেন। বর্তমান এমপি মধ্যপ্রাচ্য সংকট ও গাজার ব্যাপারে ভোটারদের আশা-আকাংখার প্রতিফলন পার্লামেন্টে ঘটাতে পারেননি। বরং তিনি উল্টো ভোটারদের মতামতের সম্পূর্ণ বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনি নির্বাচনী আসনে সবচেয়ে বেশি বাঙালির বসবাস। গত ১৪ বছর ধরে এখানে একজন বাঙালি এমপি আছেন। বাঙালি অরিজিন এমপি হিসেবে গত ১৪ বছরে বাঙালি কমিউনিটি তাঁর কাছ থেকে কি কি পেয়েছে তার একটা পর্যালোচনা করার সময় এসেছে। আমি সবসময় জনগণের পাশে থেকেছি এবং কাউন্সিলর হিসেবে সর্বোচ্চ সংখ্যক কেসওয়ার্ক উত্থাপন করেছি। আমি বাড়িওয়ালা, ভাড়াটিয়া ও লিজ হোল্ডারদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেছি, ওকালতি করেছি। নাইফ ক্রাইমের বিরুদ্ধে আমি প্রচারণা চালিয়েছি এবং শিক্ষা পরিষেবাগুলি অ্যাক্সেস করার জন্য তরুণদের এবং তাদের পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করেছি। আমি রিজেনারেশন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছি এবং সম্প্রদায়ের উপর জীবনযাত্রার ব্যয়ের প্রভাব নিয়ে লিখেছি। সিটির প্রাচুর্য আর স্থানীয়দের জীবন সংগ্রাম বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনিতে আমি এর সবই দেখেছি। সুযোগ পেলে আমি আমাদের তরুণ-তরুণীদের জন্য চাকরি থেকে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রস্তুতি পর্যন্ত আরও ভালো সুযোগ তৈরি করতে চাই। বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনির বাসিন্দারা ভাল কিছু ডিজার্ভ করে।
লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জৈষ্ঠ সাংবাদিক সৈয়দ নাহাস পাশার এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ১২ বছর কাউন্সিলর হিসাবে কাজ করেছি। আমি আমার নির্বাচনী আসন বেথনালগ্রীন ও স্টেপনী এলাকায় দীর্ঘ ৩০ বছরেরও অধিক সময় ধরে পরিবারসহ বসবাস করছি। আমি এ এলাকার মানুষের ভালো-মন্দ, আশা-আকাঙ্খা ও সকল সমস্যা সম্পর্কে সম্যক অবগত আছি। গাজা ইস্যু ছাড়াও আমি এই সকল ইস্যু নিয়ে কাজ করতে চাই। বেথনালগ্রীন ও স্টেপনী এলাকায় মানুষ খুব কষ্টে আছেন। বর্ণবাদ ইস্যু ছাড়াও বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনিতে জিপি অ্যাপয়েন্টমেন্টে বিলম্ব, ডেন্টিস্ট ও অ্যাম্বুলেন্স এবং ভেঙে পড়া স্কুলগুলি টোরি সরকারের ফাঁকা বুলি ও অন্তঃসারশূন্যতা প্রমাণ করে। জনগণ পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। আমি আপনাদের সমর্থন ও জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বেথনালগ্রীন ও স্টেপনী এলাকার মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে ও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করতে চাই। রাবিনা খান আসন্ন নির্বাচনে জয়ী হতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। সৈয়দ নাহাশ পাশা রাবিনা খানকে শুভ কামনা জানান।
আলোচনা সভায় সাপ্তাহিক সুরমা’র প্রধান সম্পাদক ফরীদ আহমেদ রেজা, সম্পাদক শামসুল আলম লিটন, সাবেক সম্পাদক কবি আহমেদ ময়েজ, ডিপ্লোমেটিক এডিটর শেখ আহমেদ, সিনিয়র কন্ট্রিবিউটর প্রাবন্ধিক আহমেদ কুতুব, ক্রীড়া সম্পাদক মুহাম্মদ শরীফুজ্জামান ও ডাটা অ্যানালিস্ট রুপম রাজ্জাক রাবিনা খানকে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা ও নানান পরামর্শ দেন।
এসময় সাপ্তাহিক সুরমা’র স্পেশাল কন্ট্রিবিউটর ও নিউজ প্রেজেন্টার ডরিনা লাইজু, স্পেশাল কন্ট্রিবিউটর শামসুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক কবি আবদুল কাইয়ুম, সাহিত্য সম্পাদক সৈয়দ রুম্মান, চিফ রিপোর্টার হাসনাত আরিয়ান খান, সিনিয়র সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী, সাংবাদিক হাসান জাবেদ, ছড়াকার ও কবি হিলাল সাইফ, আবৃত্তিকার ও সঙ্গীত শিল্পী সোমা দাস, সাবেক এমপি প্রার্থী আফজল মিয়া,সাবেক কাউন্সিলর আমিনুর খান, ব্যারিস্টার জাকির, কলামিস্ট ইউসুফ ও কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট মইনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।