ত্রিপুরা নিউজ ডেস্ক: ত্রিপুরার বর্তমান সরকার রাডার হীন জাহাজ। কারণ সরকার দিশাহীন ভাবে চলছে। এই অভিমত সিপিআইএম দলের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক জীতেন চৌধুরীর।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগরতলার মেলার মাঠ এলাকার সিপিআইএম দলের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন রাজ্য সরকারের প্রতিটি দপ্তর সীমাহীন দুর্নীতিতে ডুবে আছে। বিদ্যুৎ নিগমের বর্তমান চেয়ারম্যান রয়েছেন তিনি সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। একই ভাবে গ্রামোন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব দপ্তর দুর্নীতির পাহাড় জমে আছে। ভারত সরকারের দেওয়া প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যে সব গরীব মানুষ ঘর পাচ্ছেন তাদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে টাকা নিচ্ছেন। ৫ হাজার থেকে ৫০হাজার টাকা পর্যন্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে।
যদি কেউ টাকা দিতে অক্ষম হয় বা দিতে অস্বীকার করেন তাদের বলা হয় ঘর নির্মাণের জন্য সরকারী টাকা দেওয়া হবে না। এভাবে চাপ দিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে গরীবের কাছ থেকে। নতুন যেসব চাকুরি দেওয়া হচ্ছে তাতে দুর্নীতি হচ্ছে। এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন শাসক বিজেপি নেত্রী। রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে সরকারী মূল্যে ধান কেনার নামেও দুর্নীতি হচ্ছে।
কৃষকরা সরাসরি সরকারী আধিকারিকদের কাছে ধান বিক্রি করতে পারছেন না। এখানেও বিজেপির নেতাদের কাছে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। নেতারা মধ্যবর্তী লোক হয়ে ধান কিনে ফলে কৃষকরা প্রকৃত ভাবে লাভবান হচ্ছে না। এছাড়াও কৃষকদের যে মূল্য দেওয়া হচ্ছে তা তুলনামূলক খুব কম।আজাদি কি অমৃত মহোৎসবের নামে লাখ লাখ টাকা খরচ করে সরকার উৎসব করছে। যা মানুষের কোন কাজে আসছে না। এই অর্থ দিয়ে মানুষের জন্য উন্নয়ন মূলক কাজ করা যেতো।
ঠিক একই ভাবে ত্রিপুরার জনজাতি স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের নতুন প্রশাসকরাও হরির লুট করছে। তারা রাজ্যের বিজেপি সরকারকে দেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিল্পীদের এনে আনন্দ ফুর্তি করছে। অথচ তারা চাইলে এই অর্থ দিয়ে মানুষের জন্য ভালো কাজ করতে পারতো।
তিনি আরো বলেন রাজ্যে নেশার রমরমা। নেশার জন্য একাংশ যুবক বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। গত ৬ডিসেম্বর থেকে ২৩ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত এই ৫০দিনে রাজ্যে ২৩টি খুনের ঘটনা ঘটেছে, ৪৭ আত্মহত্যা, ৫টি ধর্ষণ, ৩২টি অস্বাভাবিক মৃত্যু, ১১টি শ্লীলতাহানি, ৪টি অপহরনের ঘটনা ঘটেছে। চুরির ঘটনা অসংখ্যটি ঘটেছে।রাজ্য সরকার বহু সরকারী চাকুরীর পদ মুছে দিচ্ছে। রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সরকার লাখ লাখ টাকা খরচ করা হচ্ছে কিন্তু এর পরও সরকারের ব্যর্থতা ঢাকছে না। এই টাকা দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করা যেত।
তারা এসব না করে বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের উপর আক্রমণ করছে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।পাশাপাশি তিনি এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের কৃষকদের প্রতি সহানুভূতিশীল নন, কারণ গত নভেম্বর মাসে মোদি গত প্রায় দুই বছর ধরে কৃষকদের আন্দোলনের সামনে মাথা নত করতে বাধ্য হয়ে বলেছিলেন কৃষক বিরোধী আইন বাতিল করবেন। তাঁর এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া ৭০দিন পার হয়ে গেলেও তিনি তা সম্পূর্ণরূপে পূরণ করেননি। এর প্রতিবাদে তাঁরা আগামি দিনে আন্দোলনে যাবেন বলেও এদিন জানিয়েছেন।