সন্দীপ / সমীপ, আগরতলা: ত্রিপুরা রাজ্য নির্বাচন কমিশন সমস্ত ২০টি পুর সংস্থার ভোটগ্রহণ স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে। ফলে, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ওই পুর সংস্থায় প্রশাসক নিয়োগ করা হবে। প্রশাসক নিযুক্তির বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে নগরোন্নয়ন দফতর। কংগ্রেস এবং সিপিএম ত্রিপুরা সরকারের এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে, বিজেপি সুর চড়িয়ে বলেছে, আমরা যখন মাঠে নামব তখন দেখে নেব কার কত শক্তি।
প্রসঙ্গত, সমস্ত নগর সংস্থার মেয়াদ কয়েক দিনের মধ্যে সমাপ্ত হয়ে যাবে। ত্রিপুরায় একটি পুর নিগম, ১৩টি পুর পরিষদ এবং ছয়টি নগর পঞ্চায়েত রয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দাবি, করোনার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ত্রিপুরা সরকারের নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব কিরেন গিত্তের জারিকৃত আদেশে বলা হয়েছে, রাজ্যের নগর সংস্থার নির্বাচন ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। ফলে ওইসব সংস্থার মেয়াদ সমাপ্ত হওয়ার তারিখ থেকে প্রশাসক নিয়োগের আদেশও দিয়েছেন তিনি।
সেই আদেশ অনুযায়ী পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক আগরতলা পুর নিগমের প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। এছাড়া মহকুমাশাসকরা স্থানীয় নগর সংস্থা দেখাশোনা করবেন। আদেশে জানানো হয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন ত্রিপুরার নগর সংস্থাগুলির সাধারণ নির্বাচন আগামী বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে।
বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে প্রবীণ সিপিআইএম নেতা পবিত্র কর বলেন, প্রায় সব রাজ্যেই নির্বাচনের ঘোষণা করা হচ্ছে। তবে ত্রিপুরার ক্ষেত্রে সরকার কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিহারে নির্বাচন হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রচার করেছেন। কেরালা, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট এবং হায়দরাবাদে স্থানীয় নগর সংস্থাগুলির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু, শুধু ত্রিপুরায় কোনও নির্বাচন ঘোষণা হচ্ছে না। তিনি দাবি করেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি ত্রিপুরায় দলের শেকড় হারিয়েছে এবং এই মুহূর্তে নির্বাচনে ভয় পাচ্ছে। তাই তারা নির্বাচন স্থগিত থাকুক চাইছে।
তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারও নির্বাচন স্থগিত করেছিল। তবে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ তাদের স্থানীয় সংস্থার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় বাধ্য করেছিল। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ত্রিপুরা সরকারের এটি একটি অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ। আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাই। এদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পীযূষকান্তি বিশ্বাস শীঘ্রই নির্বাচনের ঘোষণা না করলে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
বিরোধীদের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপির প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে এবং সে অনুযায়ী নির্বাচন স্থগিত রেখেছে। ফলে সময় যখন আসবে, আমরা দেখব নির্বাচনে কে জেতে। আমরা এখনই কিছু বলব না। তবে, বিরোধীদের যদি কিছু বলার বা করার থাকে তবে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং পদক্ষেপও নিতে পারেন। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব, বলেন তিনি।