আগরতলা: দীর্ঘ বাম জমানায় বহু জমি এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মহল বন্দোবস্ত পেয়েছে। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসে এই সব বেআইনী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা কার্য্যকর করা হয়নি। এই জমি বন্টন কেলেঙ্কারি বাম আমলে চুপিসারেই হয়েছে। প্রতিবাদী শক্তি সোচ্চার হতে সাহসী হয়নি। সংগীত গ্রাম, কৃষক সেবা কেন্দ্র, যাদু কেন্দ্র ইত্যাদির নামে বিস্তর সরকারি জমি বিলি বন্টন হয়। কিন্তু কাজের কাজ অষ্টরম্বা। এর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবী উঠলেও বর্তমানে তাও প্রায় চাপা পড়ে আছে। সবচেয়ে আশ্চর্য্যের বিষয় অনেক মূল্যবান জায়গা নেতার আত্মীয় ও পরিজনদের নামে বন্দোবস্ত করিয়ে নেয়া হয়। বটতলা টিআরটিসি স্ট্যান্ডের জমিও বাম প্রভাবশালীদের মধ্যে বন্দোবস্তের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। তখন ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি। ফলে, জমি ডাকাতির ঘটনা বাড়তেই থাকে।
জমানা বদলের সাথে সাথে জমি প্রাপক সুবিধাভোগীরা রাতারাতি বর্তমান ক্ষমতাসীনদের সাথে গোপন যোগাযোগ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। আর এজন্যই তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। রাজ্যে অনেক ভূমিহীন আছেন যারা ভূমির অভাবে কিছুই করতে পারছেন না। তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকারি জমি বন্টনের জন্য নামকাওয়াস্তে একটি কমিটিও আছে। তাদের অভিযোগও সরকারি পর্য্যায়ে কলাপাতার সমান বলে অভিযোগ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বর্তমানে যেসব সরকারি জমি পতিত আছে সেগুলি বিলি বন্টনের ক্ষেত্রে বা বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রশ্ণে একটি শক্তিশালী নীতিনির্দেশিকা প্রণয়ন করার তাগিদ এসেছে। জমি লুটের তদন্ত করলে বহু কেলেংকারী বেরিয়ে আসবে। এই কলংকিতরাই এখন তলে তলে ক্ষমতাসীনদের ভীড়ে মিশে যাচ্ছেন। অদূর ভবিষ্যতে জমি লুট ইত্যাদির বিরুদ্ধে সরকার শক্তিশালী ভূমিকা না নিলে রাজ্যের প্রভূত ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, রাজধানী আগরতলা শহরের আশেপাশে প্রচুর সরকারি জমি তথা খাস জমিতে ভূমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। বাড়ি ঘর করে বসবাসও করছেন। আশ্চর্য্যের বিষয় হচ্ছে যাদেরকে ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে তারা আবার তাদের বাড়ির আশেপাশের জায়গা দখল করে নিয়েছেন। এমন ঘটনার অভাব নেই। তাছাড়া যেসব সংস্থার নামে সরকারি জমি দেয়া হয়েছে সেই সব সংস্থার অস্তিত্বই নজরে নেই। কোটি কোটি টাকার সরকারি জমি হাতিয়ে নিয়েছে ওইসব সংস্থা। কিছু সংস্থাতো আবার যে কারণে জমি নিয়েছিল তা না করে অন্য ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।