আগরতলা: শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে দশমী তিথি। শাস্ত্র মতে, এ তিথিতে দেবী দুর্গা মর্তলোকে তার বাপের বাড়ি থেকে সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়ি কৈলাসের দিকে যাত্রা করেন।
এদিন দুর্গাপূজার শেষ দিন তাই প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর জন্য নারীরা ভিড় জমান। দুর্গা প্রতিমার সামনে ধুপকাঠি-মোমবাতি জ্বালিয়ে ও মিষ্টিমুখ করিয়ে এ বছরের মতো বিদায় জানান এবং আগামী বছর আবার পৃথিবীতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখেন।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও দশমী তিথিতে সকাল থেকেই নারীরা ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার প্রতিটি প্যান্ডেলে আসতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্যান্ডেলগুলোতে ভিড় বাড়তে থাকে। রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী দুর্গাবাড়ী মন্দিরে সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায়। নারীরা লাল শাড়ি পরে আসেন দেবীকে প্রথমে শেষবারের মতো পূজা করতে। তারপর নিজেদের মধ্যে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেন।
দুর্গাবাড়ী মন্দিরে আসা কল্পনা রায় এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, দেবী দুর্গা একদিকে যেমন মায়ের মতো অপরদিকে মেয়ের মতো। একটি মেয়েকে যেভাবে বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার সময় আপ্যায়ন করা হয় ঠিক তেমনভাবে দেবী দুর্গাকেও প্রতিবছর দশমী তিথিতে আপ্যায়ন ও বিদায় জানানো হয়। সেসঙ্গে পরের বছর আবার আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখা হয়। পাশাপাশি সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে নারীরা স্বামীসহ পরিবারের সবার দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করেন। যুগ যুগ ধরে এ রীতি চলে আসছে বলে জানান তিনি।
এভাবে দেবী দুর্গাকে সবাই বিদায় জানানোর পর সবশেষে নদী অথবা পুকুরের পানিতে বিসর্জন দেওযা হয়। আগরতলার হাওড়া নদীতে একাধিক ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। প্রতিমা বিসর্জন যাতে সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয় তাই জেলা প্রশাসনের তরফে প্রতিমা বিসর্জনের ঘাটগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।