শিরোনাম
শনি. ডিসে ৬, ২০২৫

পিএসসি’র প্রধান কার্যালয়ে তালা, পেছনের দরজা দিয়ে পালালেন কর্মকর্তারা

  • চার ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় বিসিএস ভাইভার নম্বর।

লণ্ডন, ১৮ সেপ্টেম্বর- স্বাস্থ্যখাতে সামগ্রিক অনিয়ম ও এনক্যাডারমেন্টের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে মুভ টু পিএসসি কর্মসূচি চলাকালে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) প্রধান কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আতঙ্কে সংস্থাটির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রাণ বাঁচাতে পেছনের গেট দিয়ে পালিয়ে যান।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পিএসসি’র যুগ্মসচিব ড. আব্দুল আলীম খান বলেন, ‘স্বাস্থ্য ক্যাডারদের ৫০-৬০ জনের একটি দল পিএসসিতে এসে আন্দোলন করছিলেন। এ সময় তারা সবাই পিএসসিতে প্রবেশ করে সচিবের সঙ্গে কথা বলতে চান। তবে আমরা তাদের বলেছিলাম ৪-৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল যেন কথা বলতে আসেন। তবে প্রথমে তারা আমাদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য ক্যাডারের চিকিৎসকরা তাতে রাজি না হলে আমরা আমাদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে মূল ফটকে তালা মেরে দেই। এ সময় আমাদের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী পেছনের গেট দিয়ে কার্যালয় ছেড়ে চান। আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এভাবে চলতে পারে না।

এর আগে গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মুভ টু পিএসসি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যখাতে সামগ্রিক অনিয়মের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য ক্যাডার এসোসিয়েশন থেকে এক দফা, এক দাবি নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট ও বিসিএস ফেল করেও এনক্যাডারমেন্ট হওয়া ২ হাজার ৩৪৬ জন এডহক ও প্রকল্প চিকিৎসকদের পক্ষে দেওয়া আওয়ামী সরকারের সকল অবৈধ সুবিধা বাতিল করতে হবে। এসব সুবিধার মধ্যে রয়েছে এনক্যাডারমেন্ট, পদোন্নতি, পদায়ন, প্রমার্জনা। একইসঙ্গে প্রশাসনে রয়ে যাওয়া বিগত সরকারের প্রেতাত্মাদের বিরুদ্ধে কঠিনতম শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে স্বাস্থ্য ক্যাডার এসোসিয়েশন।

চার ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় বিসিএস ভাইভার নম্বর!

ভালো বেতন কাঠামো, নানা সুযোগ সুবিধা এবং সামাজিক মর্যাদার কারণে চাকরিপ্রার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বিসিএস পরীক্ষা। তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হওয়া এ পরীক্ষার প্রতিটি ধাপে পৃথক পৃথকভাবে উত্তীর্ণ হতে হয়। বিসিএস প্রত্যাশীদের মধ্যে চাউর, আকর্ষণীয় এই চাকরির পরীক্ষায় প্রিলি-লিখিততে ভালো করেও শুধু ভাইভায় ভালো না করায় বাদ পড়েন মেধাবী অনেক শিক্ষার্থী। ফলে এ ধাপটি প্রার্থীদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলেও কীভাবে বণ্টণ করা হয় এই ধাপের নম্বর— তা সবসময়ই অজানা তাদের কাছে।

বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার নম্বর মোট চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। ক্যাটাগুলো হলো- ‘এক্সিলেন্ট,’ ‘এবাভ এভারেজ,’ ‘এভারেজ এবং ‘বিলো এভারেজ’। এর ভিত্তিতেই চূড়ান্তভাবে মূল্যায়িত হয়ে থাকেন প্রার্থীরা। পরবর্তীতে লিখিত এবং ভাইভার নম্বর যোগ করে কে কোন ক্যাডারে সুপারিশ পাবেন তা নির্ধারিত হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর এবং ভাইভায় ‘এক্সিলেন্ট’ পেলে প্রার্থীরা সাধারণত প্রশাসন-পুলিশ এবং পররাষ্ট্র ক্যাডার পেয়ে থাকেন। বিপরীত চিত্রও ঘটে অনেক সময়।

পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) একটি সূত্র জানিয়েছে, বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার একটি বোর্ডে তিনজন থাকেন; যাতে বোর্ড চেয়ার হিসেবে থাকেন পিএসসি’র একজন সদস্য। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং নাগরিক সমাজের (এক্সপার্ট) একজন প্রতিনিধি থাকেন। প্রত্যেকে প্রার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্ন করেন। প্রশ্নের উত্তরের বিপরীতে নম্বর দেন। পরবর্তীতে তিনজন তাদের দেওয়া নম্বরগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। এরপর নম্বরের গড় করে প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে তোলা হয়।

মৌখিক পরীক্ষা ৮০ শতাংশ কিংবা তার চেয়ে বেশি নম্বরকে ধরা হয় ‘এক্সিলেন্ট’। অর্থাৎ একজন প্রার্থী ২০০ নম্বরের মধ্যে ১৬০ কিংবা তার বেশি পেলে তাকে এক্সিলেন্ট দেওয়া হয়। এছাড়া ৭০-৭৯ শতাংশ কিংবা তার চেয়ে বেশি নম্বরকে ‘এবোভ এভারেজ,’ ৬০-৬৯ শতাংশকে ‘এভারেজ’ এবং ৫০-৫৯ শতাংশ নম্বর পেলে ‘বিলো এভারেজ’ হিসেবে ধরা হয়—পিএসসি’র শীর্ষ কর্মকর্তা

সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কীভাবে দেওয়া হবে তার নির্দিষ্ট কোনো অফিসিয়াল কিংবা লিখিত কোনো নিয়ম বা ফরম্যাট নেই। তবে কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা মিলে কিছু দিক নির্দেশনা তৈরি করেছেন। এই গাইডলাইন অনুসরণ করেই বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর দেওয়া হয়। একজন প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব কেমন; তার জানাশোনা কেমন; কীভাবে প্রশ্নের উত্তর করছেন; তার মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলী আছে কি না; উত্তর দেওয়ার সময় তার ভাব-ভঙ্গিমা কেমন ছিল— এগুলো বিবেচনা করা হয়। ৪৩তম বিসিএস থেকে এ গাইডলাইন অনুসরণ করা হচ্ছে বলে জানায় ওই সূত্র।

 পিএসসি’র শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর সরাসরি দেওয়া হয় না। ‘এক্সিলেন্ট,’ ‘এবাভ এভারেজ,’ ‘এভারেজ,’ এবং ‘বিলো এভারেজ’— এই চার ক্যাটাগরিতে ভাগ করে মার্কিং করা হয়। এটি অফিসিয়াল কোনো গাইডলাইন না। আন-অফিসিয়ালি এই গাইডলাইন ফলো করেই নম্বর বণ্টন করা হয়ে থাকে। বিসিএস পরীক্ষার নীতিমালা অনুযায়ী, ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ হওয়ার পর ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় বসতে হয় প্রার্থীদের। লিখিত পরীক্ষায় মোট নম্বরের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৪৫০ নম্বর পেলে ভাইভার জন্য ডাকা হয়। শুধু সামগ্রিকভাবে ৪৫০ নম্বর পেলেই হবে না, প্রতিটি বিষয়ে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৬০ এবং ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৩০ পেতে হবে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, মৌখিক পরীক্ষা ৮০ শতাংশ কিংবা তার চেয়ে বেশি নম্বরকে ধরা হয় ‘এক্সিলেন্ট’। অর্থাৎ একজন প্রার্থী ২০০ নম্বরের মধ্যে ১৬০ কিংবা তার বেশি পেলে তাকে এক্সিলেন্ট দেওয়া হয়। এছাড়া ৭০-৭৯ শতাংশ কিংবা তার চেয়ে বেশি নম্বরকে ‘এবোভ এভারেজ,’ ৬০-৬৯ শতাংশকে ‘এভারেজ’ এবং ৫০-৫৯ শতাংশ নম্বর পেলে ‘বিলো এভারেজ’ হিসেবে ধরা হয়। বিসিএস পরীক্ষার নীতিমালা অনুযায়ী, ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ হওয়ার পর ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় বসতে হয় প্রার্থীদের। লিখিত পরীক্ষায় মোট নম্বরের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৪৫০ নম্বর পেলে ভাইভার জন্য ডাকা হয়। শুধু সামগ্রিকভাবে ৪৫০ নম্বর পেলেই হবে না, প্রতিটি বিষয়ে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৬০ এবং ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৩০ পেতে হবে। মৌখিক পরীক্ষার জন্য ২০০ নম্বর নির্ধারণ করা থাকে। মৌখিকে পাস নম্বর ১০০। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ নম্বর পেলে মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হিসেবে ধরা হয়।

ভাইভা বোর্ডে যারা থাকেন: বিসিএসের ভাইভায় একাধিক বোর্ড গঠন করা হয়। পিএসসি’র চেয়ারম্যান ছাড়াও সদস্যরা এসব বোর্ডের প্রধানের ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। বোর্ড প্রধান ছাড়াও সরকার কর্তৃক মনোনীত যুগ্ম সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তা/বোর্ড সদস্য এবং কমিশন কর্তৃক মনোনীত বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ/বোর্ড সদস্য ভাইভা বোর্ডে থাকেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *