সংস্কৃতি নিউজ ডেস্ক: প্রত্যেক বছর বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে আয়োজিত একটি তুলনামূলকভাবে নতুন বর্ষবরণ উৎসব। এটি হিন্দু মুসলমান নয়, আপামর বাঙালির উৎসব! নববর্ষ, মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালি জীবনের অঙ্গ। পালন করতেই হবে।পয়লা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রায় তুলে ধরা হয় বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক৷ সেটা ফুটিয়ে তোলা হয় চিত্র, মুখোশ এবং প্রতীকে৷ মঙ্গল শোভাযাত্রা একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লব। ১লা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রায় তুলে ধরা হয় বাঙালি সংস্কৃতির নানান দিক৷ প্রতি বছরই এই মঙ্গল শোভাযাত্রার একটি মূলভাব থাকে৷
সেই মূলভাব প্রতিবাদের, ভালোবাসার,দ্রোহের৷ সেখানে অশুভের বিনাশ কামনা করা হয়৷ অশুভ শক্তির বিনাশ হোক। সত্য সুন্দরের প্রার্থনা হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস সম্পর্কে জানা প্রয়োজন:
মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৮৫ সালের ১লা বৈশাখে যশোরে৷ তখন দেশে ছিল সামরিক স্বৈরশাসন৷ উদ্দেশ্য ছিল দেশের লোকজ সংস্কৃতি উপস্থাপনের মাধ্যমে সমস্ত মানুষকে এক করা৷ তাদের সবাইকে এক যাত্রায় নিয়ে আসা৷ আর সেই শোভাযাত্রায় অশুভের বিনাশ কামনা করে শুভ শক্তির আগমনের প্রার্থনা করা৷ এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন চারু শিল্পী মাহবুব জামাল শামিম৷ তিনি ঢাকার চারুকলা থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে যশোরে চারু পিঠ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন তখন৷ সত্য ও সুন্দরের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষকে একজোট করতে হবে।
তাদের শোভাযাত্রায় স্থান পায় নানা ধরনের চিত্র, হাতে বানানো পাখা, ঘোড়া, হাতি, ঢোল, বাঁশি প্রভৃতি৷মঙ্গল শোভাযাত্রার মূলভাব প্রতিবাদের, ভালোবাসার এবং দ্রোহের। তবে যশোরেই মঙ্গল শোভাযাত্রা সীমাবদ্ধ হয়ে থাকেনি। ১৯৮৯ সালে ১লা বৈশাখে ঢাকার চারুকলা থেকেও শুরু হয় এই মঙ্গল শোভাযাত্রা৷
সেই শোভাযাত্রার মূলভাব ছিল অগণতান্ত্রিক শক্তির বিনাশ৷ এখন তো সারা দেশেই মঙ্গল শোভাযাত্রা ছড়িয়ে পড়েছে৷ বাঙালি মানেই মঙ্গল শোভাযাত্রা। মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালিকে শক্তি দেয়৷ বাঙালি হিসেবে গর্ব করার মত অনুপ্রেরণা দেয়৷ অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহস যোগায়। শোভাযাত্রা হয়ে উঠেছে সর্বজনীন এক উৎসব।